বেস্ট ফ্রেন্ড
বেস্ট ফ্রেন্ড কাকে বলে? বেস্ট ফ্রেন্ড বলতে আমরা সেই বিশেষ ব্যক্তিকে বুঝি, যিনি সবসময় আমাদের পাশে থাকেন, সুখে-দুঃখে, আনন্দে-বেদনায়, এবং আমাদের জীবনের প্রতিটি ছোট-বড় মুহূর্তে অংশীদার হন। এই বন্ধুর সাথে আমাদের সম্পর্কটা বিশেষ, কারণ তিনি শুধু আমাদের ভালো-মন্দ ভাগাভাগি করেন না, বরং আমাদের জীবনের পথচলায় অনুপ্রেরণাও দেন। বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে কাটানো সময়, সেই মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনের স্মৃতিতে চিরকাল বেঁচে থাকে। তাদের সাথে শেয়ার করা কথাগুলো, হাসি-ঠাট্টাগুলো, এমনকি মান-অভিমানগুলোও জীবনের বিশেষ অংশ হয়ে ওঠে। তাদের সঙ্গে সম্পর্কটা শুধুমাত্র বন্ধুত্বের সীমারেখা ছাড়িয়ে যায়, সেটা যেন আত্মার সম্পর্ক হয়ে ওঠে। এই বন্ধুর সাথে খোলা মনে সবকিছু শেয়ার করা যায়, কারণ আমরা জানি, তিনি আমাদের সবসময় বুঝবেন এবং পাশে থাকবেন। বন্ধুত্বের গুরুত্ব জীবনের প্রতিটি স্তরে অপরিসীম, এবং এই সম্পর্কটা জীবনকে আরও সুন্দর এবং অর্থবহ করে তোলে। এককথায়, বেস্ট ফ্রেন্ড হলো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ।
বেস্ট ফ্রেন্ড by Pexels.com |
জীবনের পথচলায় কেউই একা বড় হয় না। জন্মের পর থেকেই বাবা-মা আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে পাশে থাকেন, আমাদের নিরাপত্তা ও ভালোবাসার চাদরে মুড়িয়ে রাখেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা ধীরে ধীরে তাদের সুরক্ষা থেকে একটু দূরে এগিয়ে যাই, তবে তাদের প্রভাব আমাদের জীবনে চিরকাল থেকেই যায়। আমাদের স্কুল জীবন শুরু হয়, বন্ধু, সহপাঠীর এবং পরিচিত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এই পরিচিত সব মানুষের মাঝে সবাইকে আমরা সমান ভাবে দেখি না, সব সহপাঠী এবং প্রায় একসাথে বড় হওয়া অনেকের সাথে আমরা সমান ভাবে মিশি না। সময়ের ধারায় বন্ধুত্বের আঙিনায় একটি বিশেষ মানুষ ধীরে ধীরে প্রবেশ করে, যে হয়ে ওঠে আমাদের খেলার সাথী, চলার পথের সঙ্গী, সবকিছু ভাগাভাগির সঙ্গী। তার সাথে সময় কাটানো আর গল্পে মেতে ওঠা যেন জীবনের অন্যতম স্বস্তির জায়গা। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের মধ্যে একজন আলাদা করে জায়গা করে নেয় আমাদের মনে—একজন বিশেষ বন্ধু, যে আমাদের মনের গভীরতম কোণে থেকে যায়। সেই বিশেষ মানুষটাই হয়ে ওঠে আমাদের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ বা জীবনের সেরা বন্ধু। এই স্পেশাল মানুষটির সাথে কোন কথা শেয়ার না করলে ভাললাগে না। এমনটা অন্য কারো জন্য হয় না, এমন ফিলিংস শুধুমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ডের জন্য হয়। একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ডরাই আমাদের মনের গোপনীয়তা জানে। আমরা কেমন মানুষ, চরিত্র কেমন সেটা বেস্ট ফ্রেন্ডের চেয়ে কেউ বেশি জানেনা।
বেস্ট ফ্রেন্ডের ভূমিকা কি?
চলার পথে বেস্ট ফ্রেন্ড অনেক বড় ভুমিকা রাখে, কোন প্রতিদানের আশা না করে অনেক বড় সাপোর্ট দেয়, আপনার সুখে-দুঃখে পাশে থাকে, আপনার মন খারাপের সময় মোটিভেট করে, মেন্টাল সাপোর্ট দেয়। একটি মজার বিষয় হলো বেস্ট ফ্রেন্ড এর কাছে আপনার কোন ভুল নেই, সবই সঠিক। সবার সামনে সে আপনাকেই সাপোর্ট করবে, আপনার পক্ষেই কথা বলবে কিন্তু দিন শেষে আপনার ভুলটা ঠিকই আপনাকে ধরিয়ে দিবে এবং ঠিকই পরবর্তিতে কি করনীয় সেটাও বলে দিবে। একজন বেস্ট ফ্রেন্ড আপনার হাত ছাড়বে না কখনোই।
বেস্ট ফ্রেন্ডের ভূমিকা জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুমুখী। তাদের প্রভাব শুধুমাত্র বন্ধুত্বের সীমারেখায় আবদ্ধ থাকে না; তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানে বেস্ট ফ্রেন্ডের কিছু প্রধান ভূমিকা তুলে ধরা হলো:
- বিশ্বাসযোগ্য সহযোগীঃ বেস্ট ফ্রেন্ড সবসময় আপনার পাশে থাকেন, বিশেষ করে যখন আপনি কঠিন সময়ের মধ্যে পড়েন। তিনি আপনার সাথে সমস্যার মোকাবিলা করেন, সমাধান খুঁজে বের করতে সাহায্য করেন, এবং সংকটময় মুহূর্তগুলোতে আপনাকে ছেড়ে যান না।
- মানসিক সহায়কঃ বেস্ট ফ্রেন্ড মানসিকভাবে আপনাকে শক্তিশালী করে তোলে। তিনি আপনার আনন্দ ও দুঃখের মুহূর্তগুলোতে পাশে থাকেন, আপনাকে মানসিকভাবে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করেন। যখনই আপনি মানসিকভাবে চাপে থাকেন, তখন বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে আপনি স্বস্তি পান।
- সত্যিকারের পরামর্শদাতাঃ বেস্ট ফ্রেন্ড যখন প্রয়োজন, তখন সৎ ও খোলামেলা পরামর্শ দেন। তিনি আপনার মঙ্গল চান এবং তাই সঠিক ও সঠিক পথনির্দেশনা দেন। তিনি আপনাকে বুঝিয়ে দেন কখন আপনার কর্মের পরিবর্তন প্রয়োজন এবং কখন আপনাকে স্থির থাকতে হবে।
- প্রেরণা প্রদানকারীঃ বেস্ট ফ্রেন্ড আপনাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেন এবং আপনার জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি আপনার স্বপ্ন এবং লক্ষ্য সম্পর্কে জানেন এবং সেই অনুযায়ী আপনাকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেন। আপনার প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস আপনাকে সাহস যোগায়।
- আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিঃ বেস্ট ফ্রেন্ড আপনাকে আপনার নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে বিশ্বাসী করে তোলেন। তার সাথে থাকা মানে আপনার নিজের মূল্যবোধের প্রতি আস্থা স্থাপন করা। তিনি আপনার যোগ্যতাকে বিশ্বাস করেন এবং আপনাকে আত্মবিশ্বাসী হতে সহায়তা করেন।
- আপনার আনন্দের অংশীদারঃ বেস্ট ফ্রেন্ড আপনার জীবনের প্রতিটি আনন্দের মুহূর্তে সঙ্গ দেন। তিনি আপনার সাফল্যে আনন্দিত হন এবং ছোট ছোট আনন্দগুলোও উদযাপন করেন। তার সাথে কাটানো সময় সবসময়ই উপভোগ্য এবং সুখকর।
- মানসিক ভারসাম্য রক্ষাঃ বেস্ট ফ্রেন্ড আপনার জীবনের মানসিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি আপনাকে কষ্টের সময়ে সমর্থন করেন, আপনার উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করেন এবং জীবনের প্রতিকূলতাগুলো সহজে মোকাবিলা করতে শক্তি জোগান।
- একটি নির্ভরযোগ্য কাঁধঃ যখন আপনি মানসিকভাবে ভারাক্রান্ত হন, বেস্ট ফ্রেন্ডের কাঁধই আপনার আশ্রয়স্থল। তিনি আপনাকে শোনেন, আপনার চিন্তাভাবনাগুলোকে বোঝেন, এবং আপনাকে বোঝাতে পারেন যে আপনি কখনো একা নন।
- আত্মিক সংযোগঃ বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে আপনার একটি গভীর আত্মিক সংযোগ থাকে। এই বন্ধন শুধুমাত্র কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি অনুভূতির গভীরে পৌঁছায়। তিনি আপনার সুখ-দুঃখ সব অনুভব করতে পারেন এবং একইভাবে আপনার জন্যও অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেন।
বেস্ট ফ্রেন্ডের এই বহুমুখী ভূমিকা আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি কেবল একজন বন্ধু নন; তিনি একজন সহচর, পরামর্শদাতা, এবং জীবনের পথে একজন স্থায়ী সঙ্গী।
বেস্ট ফ্রেন্ডের গুণাবলী
একজন বেস্ট ফ্রেন্ড কেবল একজন সাধারণ বন্ধু নয়, তার চেয়ে অনেক বেশি। তার সাথে সম্পর্কটি জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পর্কগুলোর মধ্যে একটি। তাহলে একজন আদর্শ বেস্ট ফ্রেন্ডের কী কী গুণ থাকা উচিত? আসুন জেনে নেওয়া যাকঃ
- বিশ্বস্ততাঃ বেস্ট ফ্রেন্ড সবসময় বিশ্বস্ত থাকে। আপনি তাদের ওপর পুরোপুরি ভরসা করতে পারেন এবং তারা আপনার ব্যক্তিগত তথ্যকে সুরক্ষিত রাখেন।
- সাহায্যকারীঃ বেস্ট ফ্রেন্ড সবসময় সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকেন, বিশেষ করে যখন আপনি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। তারা আপনার সমস্যাগুলো সমাধান করতে চান এবং আপনাকে প্রয়োজনীয় সমর্থন প্রদান করেন।
- সহানুভূতিশীলঃ বেস্ট ফ্রেন্ড আপনার অনুভূতিগুলো বুঝতে পারেন। তারা যখন আপনার পাশে থাকেন, আপনি অনুভব করেন যে আপনি সত্যিকারের একজন বন্ধুর সঙ্গে আছেন, যিনি আপনার আনন্দ এবং দুঃখের অংশীদার হতে চান।
- সততাঃ তারা আপনার কাছে সবসময় সৎ থাকেন। আপনার ভুলত্রুটি সোজাসাপ্টা ভাবে বলতে দ্বিধা করেন না, তবে তা করেন আপনার ভালোর জন্যই।
- সত্যবাদীঃ একজন বেস্ট ফ্রেন্ড সবসময় সত্য কথা বলে। সে কখনো মিথ্যা বা প্রতারণা করে না।
- অনুপ্রেরণা দেওয়াঃ বেস্ট ফ্রেন্ড আপনাকে সবসময় অনুপ্রেরণা দেন, বিশেষ করে যখন আপনি হতাশ বোধ করেন। তারা আপনাকে সাহস যোগান এবং আপনার স্বপ্ন পূরণের জন্য উৎসাহিত করেন। সে আপনাকে নতুন কিছু শিখতে এবং নিজেকে উন্নত করতে উৎসাহিত করে।
- ধৈর্যশীলতাঃ তারা ধৈর্যশীল, বিশেষ করে যখন আপনার জীবনে কিছু কঠিন সময় আসে। তারা আপনাকে সময় দেন, এবং আপনার সাথে ধৈর্য ধরে থাকেন যতক্ষণ না আপনি সুস্থির হন।
- বিনয় ও নম্রতাঃ বেস্ট ফ্রেন্ড সাধারণত নম্র ও বিনয়ী হন। তারা নিজেরা কখনও বড়াই করেন না, বরং আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেন।
- আনন্দময় উপস্থিতিঃ তারা সর্বদা আনন্দময় এবং ইতিবাচক শক্তি ছড়ান। তাদের সাথে সময় কাটালে আপনি সবসময় ভালো অনুভব করবেন এবং মানসিকভাবে প্রশান্তি পাবেন।
- সমর্থনকারীঃ সে আপনার স্বপ্ন ও লক্ষ্য পূরণে আপনাকে সবসময় সমর্থন করে।
- স্বাধীনঃ সে আপনাকে নিজের মতো করে থাকতে দেয়।
- ক্ষমাশীলঃ সে আপনার ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দেয়।
- অবিচলঃ সময়ের সাথে সাথে আপনার সাথে তার বন্ধুত্বের গভীরতা কমে না।
বন্ধুত্বের বিভিন্ন রূপ
বন্ধুত্বের বিভিন্ন রূপ আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছেলে-ছেলে বন্ধুত্ব সাধারণত একই আগ্রহ ও শখের কারণে গড়ে উঠে, যেখানে প্রতিযোগিতা এবং সহযোগিতা একসঙ্গে চলে। মেয়ে-মেয়ে বন্ধুত্বে মমতা এবং সমর্থন প্রধান্য পায়, যেখানে অনুভূতির আদানপ্রদান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ছেলে-মেয়ে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে, সাধারণত একে অপরের প্রতি আলাদা ধরনের বোঝাপড়া এবং সংবেদনশীলতা প্রয়োজন হয়। প্রতিটি বন্ধুত্বের ধরন তার নিজস্ব সৌন্দর্য এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে, যা আমাদের সম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ করে। নীচে বন্ধুত্বের বিভিন্ন রূপ আলোচনা করা হলো:
বেস্ট ফ্রেন্ড ও জাস্ট ফ্রেন্ড
প্রতিটি গভীর সম্পর্কের মাঝে সামান্য ঈর্ষার উপস্থিতি প্রাকৃতিক এবং তা ভালোবাসারই একটি প্রকাশ। একটি ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে, যেমন আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড অন্য কারো সাথে সময় কাটালে, হয়তো আপনার মনে একটু অভিমান বা হালকা ঈর্ষা কাজ করবে। এটাই প্রমাণ করে, আপনার সম্পর্কটি বিশেষ। যদি এমন হয় যে কখনোই এই অনুভূতি আসে না, তবে হয়তো সেই বন্ধুটি কেবল আপনার ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’ বা সাধারণ বন্ধু। বেস্ট ফ্রেন্ড আর জাস্ট ফ্রেন্ডের মধ্যে বিশাল পার্থক্য। বেস্ট ফ্রেন্ডের জন্য থাকে আলাদা অনুভূতি, যার সাথে আপনার মনের গভীরতম সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যার কাছে আপনি নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরেন। ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ তার জীবনে বিশেষ কিছু সম্পর্ক গড়ে তোলে, এবং এমন একজন বিশেষ মানুষ থাকেই যার সাথে বাকিদের চেয়ে বেশি খোলামেলা হওয়া যায়। একজন বেস্ট ফ্রেন্ডের গুরুত্ব আর অন্যদের চেয়ে আলাদা, যার সাথে সব অনুভূতি ভাগাভাগি করা যায়, এবং যে হয় আপনার জীবনের অপরিহার্য অংশ। একটি জনপ্রিয় উদ্ধৃতিতে বলা হয় - “Best is always best! A just friend may come and go, but a best friend stands by you until the very end.” বেস্ট ফ্রেন্ডের গুরুত্ব ঠিক এখানেই, যাকে আপনি সবার আগে স্থান দেন, এবং যার পাশে থাকাটা হয়ে ওঠে জীবনের একটি মুল্যবান অঙ্গ।
কখনো এমন পরিস্থিতি আসতে পারে, যখন আপনি যাকে বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবছেন, সে হয়তো আপনাকে একইভাবে দেখছে না। এমন একটি উপলব্ধি অত্যন্ত কষ্টদায়ক এবং এটি মানসিকভাবে গভীর আঘাত করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, সেই ব্যক্তির উচিত হবে খোলামেলা ভাবে এবং স্পষ্টভাবে তার অনুভূতির কথা জানিয়ে দেওয়া, যাতে কোনো বিভ্রান্তি না থাকে। তেমনই, যদি কেউ আপনাকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড মনে করে, কিন্তু আপনি তাকে কেবল একজন সাধারণ বন্ধু হিসেবে দেখেন, তবে আপনিও সেই সত্যটা জানিয়ে দিন। এতে করে যার মনের ভুল আছে, সে তা সংশোধনের সুযোগ পাবে। এ ধরনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে মুক্ত থাকার জন্য দরকার সম্পর্কের স্বচ্ছতা এবং পারস্পরিক সম্মান। কামনা করি, প্রতিটি বন্ধুত্বই যেন এমন হয় যেখানে দুজনই একে অপরকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয় এবং বুঝতে পারে। বন্ধুত্বের মাঝে প্রত্যাশা থাকে, সেই প্রত্যাশাগুলো বোঝার চেষ্টা করুন এবং সম্পর্কের প্রতি যত্নবান হোন। বন্ধুত্ব এমনই একটি মূল্যবান সম্পর্ক যা সঠিক যত্ন পেলে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে। মনের বন্ধুদের ভালোবাসুন, বন্ধুত্বের সম্পর্ককে শক্তিশালী করুন, যাতে আপনার বন্ধুত্বের গল্পটি একদিন উদাহরণ হিসেবে বেঁচে থাকে।
ছেলে-ছেলে বেস্ট ফ্রেন্ড
সাধারনত বেস্ট ফ্রেন্ড ছেলে-ছেলের মধ্যে হলে খুব জোরালো ও বড় কারন ছাড়া সম্পর্কে নষ্ট হয়না। সাংসারিক জীবনে প্রবেশ করলে একেঅপরকে সময় দিতে না পারায় বন্ধুত্বের বন্ধন কিছুটা আলগা হয়ে যায় তবুও টিকে থাকে আজীবন। সম্পর্কে ত্রিভুজ প্রেম বা টাকা পয়সা লেনদেনজনিত কারনে এই বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মেয়ে-মেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড
মেয়ে-মেয়ের মধ্যে যে বন্ধুত্ব সেটা সংসার জীবনে প্রবেশ করলেই শেষ হয়ে যায়। কারন মেয়েরা তখন সংসারকেই প্রায়োরিটি দেয়, তার যতো আবেগ সব পরিবারের সদস্যদের প্রতি কনভার্ট হয়ে যায়। দুইজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে তাই একসময় বন্ধুত্ব শেষ হয়ে যায়।
ছেলে-মেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড
ছেলে-মেয়ের মধ্যে যে ফ্রেন্ডশিপ এটা সবচেয়ে মধুময়। বেস্ট ফ্রেন্ড যদি বিপরীত লিঙ্গের হয় তাহলে দুজনের মনেই রোমান্টিক একটা আবহ তৈরী করে যা কিছুটা প্রেমের সম্পর্কের মতো হলেও আলাদা। প্রেমের মতো দৈহিক আকর্ষণ বা প্রেমিক জুটির মতো কথোপকথন না হলেও একে অপরের প্রতি আবেগ, ভালোবাসার ও অধিকার প্রয়োগের তীব্রতা অনেক বেশি হয়ে থাকে, যদিও আবেগ ভালোবাসা প্রেমের সম্পর্কের মতো প্রকাশিত হয়না এটা দুজনের মনের গভীরেই থাকে। এই সম্পর্কে প্রেমের সম্পর্কের মতোই বন্ধুকে একদিন না দেখলে বা কথা না হলে মনে এক শূন্যতা সৃষ্টি হয়। মনে অজানা টেনশন কাজ করে। অবশ্য প্রেমের সম্পর্ক ও এই ধরনের বন্ধুত্বের মাঝে তুলনা চলেনা কারন সম্পর্কই আলাদা তবে আবেগ, ভালোবাসার দিক দিয়ে চিন্তা করলে প্রেমের সম্পর্কের তুলনায় এই ধরনের বন্ধুত্বই শ্রেষ্ঠ। প্রেমের সম্পর্কে শারিরীক আকর্ষণ বাদ দিলে সেই প্রেমকে মৃত বলা যায় অথচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে বেস্ট ফ্রেন্ড হলে সে সম্পর্কে শারিরীক আকর্ষণের ছিটেফোঁটাও থাকেনা শুধুমাত্র আবেগ, ভালোবাসা, বিশ্বাস, বোঝাপড়া কারনে এই সম্পর্ক বেঁচে থাকে। কোন কারনে বেস্ট ফ্রেন্ড এর সাথে বিচ্ছেদ ঘটলে সেটার যন্ত্রনা প্রেমিক হারানোর যন্ত্রনার চেয়ে কোন অংশেই কম হয়না। যদিও এই সম্পর্কও একদিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ
ছেলে-ছেলে বা মেয়ে-মেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ডের সম্পর্ক কোন কারনে নষ্ট হয়ে গেলে এর জন্য তেমনটা ইফেক্ট পড়েনা। কারন তারা বিকল্প কোন কিছু খুব সহজেই খুঁজে নিতে পারে। তবে ছেলে-মেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ডের সম্পর্কে বিচ্ছেদ হলে সেটা প্রেমের বিচ্ছেদে যে পরিমাণ কষ্ট পেতে হয় তার চেয়ে কোন অংশেই কম নয়। সংসার জীবনে প্রবেশ করলে জীবন সঙ্গীরা বিপরীত লিঙ্গের কোন বন্ধুকে সাধারনত অ্যালাও করেনা তাই এতো ভালো একটা সম্পর্কও একদিন শেষ হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে ত্রিভূজ প্রেমের কারনেও সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে।
ছেলে-মেয়ের বন্ধুত্ব নষ্ট হওয়ার আর একটা বড় কারন হলো বেস্ট ফ্রেন্ড এর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে দুজনের মনের অজান্তেই তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বেস্ট ফ্রেন্ড কোন খারাপ সিচুয়েশনে জড়িয়ে পড়লে তাকে মেন্টাল সাপোর্ট দিতে গিয়েও তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়। একটা কথা মনে রাখা দরকার বন্ধুত্ব ও প্রেম দুইটি আলাদা সম্পর্ক। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। তাই বন্ধুত্ব বাঁচাতে প্রেমের বিষয়ে দুজনকেই সজাগ থাকতে হবে। কোনমতেই যেন বন্ধুত্বে প্রেম ঢুকে না যায়। কোন একজন বেস্ট ফ্রেন্ড এর প্রতি দূর্বল হয়ে গেলে তাকে বুঝতে না দিয়ে টেকনিক্যালি বেস্ট ফ্রেন্ড এর মনোভাব জেনে নেয়া যেতে পারে। বেস্ট ফ্রেন্ড এর মনোভাব নেগেটিভ হলে আপনি একতরফা ভালোবাসা গোপনে বয়ে বেড়ান আজীবন তাতে সমস্যা নেই, ভুলেও ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে যাবেন না, তাহলে বন্ধুত্বের সমাপ্তি ঘটবে। আর যদি বেস্ট ফ্রেন্ড এর মনোভাব পজিটিভ হয় তাহলে তাকে মনের কথা বলে দেয়াই উত্তম। এক্ষেত্রে দুজনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক ঘটে গেলে এবং সেই সম্পর্ককে পরিণতি দিতে পারলে এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারেনা, তারা আজীবন সুখে, শান্তিতে, ভালোবাসায় কাটিয়ে দিতে পারবে। তবে জীবনটাতো সিনেমা নয় যে শেষে প্রেমের জয় হবেই। বাস্তবতা অনেক কঠিন। বন্ধুত্বের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেয়ে প্রেমের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা অনেক কঠিন। প্রেমের সম্পর্ক অনেক অতি তুচ্ছ কারন বা অকারনেই বিচ্ছেদে রূপ নেয়। দূর্ভাগ্যবশতঃ প্রেমের সম্পর্ক না টিকলে বা বিচ্ছেদে রূপ নিলে যে বেদনাদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে সেটা সহ্য দেওয়ার মতো মনোবল সবার থাকেনা। এই বন্ধুত্ব থেকে সৃষ্ট প্রেমের বিচ্ছেদের কষ্টের চেয়ে তীব্র কষ্ট অন্যকিছুতে নেই। তারা প্রেমিক হারানোর পাশাপাশি সবচেয়ে ভালো, সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে আপন একজন বন্ধুকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলে। এরকম পরিস্থিতিতে যদিও মেয়েরা পূর্বের বন্ধুত্বে ফিরে যাবার আগ্রহ দেখায় কিন্তু ছেলেরা সেটা পারেনা। পরিশেষে প্রেমের কারনে বন্ধুত্বের মৃত্যু হয়।
বেস্ট ফ্রেন্ড হারানোর ব্যথা
যে কারনেই ঘটুক না কেন বেস্ট ফ্রেন্ড হারানোর ব্যথা এমন এক গভীর এবং তীব্র অনুভূতি, যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এমনকি এতে প্রেমের বিচ্ছেদের চেয়েও ক্ষতির পরিমাণ বেশি কারন প্রেমে বিচ্ছেদ ঘটলে আবার দ্বিতীয়বার প্রেমে পড়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা থাকে কিন্তু বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে বিচ্ছেদে আবার নতুন বেস্ট ফ্রেন্ড পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। বেস্ট ফ্রেন্ড প্রেমের মতো হঠাৎ করে তৈরি হয়না। একে অপররে সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে, অনেক সময় দিয়ে, খুব ভালো ও শক্তিশালী বোঝাপড়া করে, সাপোর্ট দিয়ে একজন আরেকজনের বেস্ট ফ্রেন্ড হতে হয়। বেস্ট ফ্রেন্ড একজন আরেকজনের মনের জগতে প্রবেশ করে তাইেএকজন বেস্ট ফ্রেন্ড হারালে তার শূন্যস্থান অন্য কাউকে দিয়ে পূরণ করা সম্ভব হয়না। যারা বেস্ট ফ্রেন্ডকে হারিয়ে ফেলে তারা নিজের সবচেয়ে কাছের, সবচেয়ে আপন, নিঃস্বার্থ একজন শুভাকাঙ্ক্ষীকে হারান। অন্যান্য বন্ধু হারানো বা প্রেমিক হারানোর কষ্টটাও একসময় মিলিয়ে যায় কিন্তু বেস্ট ফ্রেন্ড হারানোর কষ্ট মনের ভিতরে থেকেই যায়। যে মনের মানুষ সবসময় আপনার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে পাশে ছিল, যার সাথে আপনি আপনার সুখ, দুঃখ, স্বপ্ন, এবং হতাশা শেয়ার করতেন, তাকে হারানো মানে জীবনের এক বিশাল অংশ হারানো। এই শূন্যতা এমন এক ধরনের যন্ত্রণা নিয়ে আসে, যা সময়ের সাথে সঙ্গে ম্লান হলেও কখনও সম্পূর্ণভাবে দূর হয় না।
বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকে। সেই হাসি, মজা, গভীর আলোচনা, এবং ছোট ছোট খুনসুটিগুলো যখন হঠাৎ করেই স্মৃতি হয়ে ওঠে, তখন মন বিষন্ন হয়ে যায়। আপনি যখন সেই স্মৃতিগুলো মনে করেন, তখন এক ধরণের ব্যথা অনুভব করেন, যা শুধুমাত্র সেই বিশেষ বন্ধুর সাথেই জড়িত। বেস্ট ফ্রেন্ড হারানোর সাথে সাথে আপনি এক ধরনের মানসিক সাপোর্টও হারান, যাকে আপনি সবসময় আপনার পাশে পাওয়ার আশা করতেন। তাদের অনুপস্থিতি আপনার জীবনের পথচলাকে একাকী এবং অসহায় করে তোলে। সেই সময়গুলোতে, যখন আপনি সবচেয়ে বেশি কারো সঙ্গ চাইবেন, তখন বেস্ট ফ্রেন্ডের অনুপস্থিতি আরও কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে। এই ব্যথা থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। অনেক সময় এই ব্যথা মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলে। তবে সময়ের সাথে সাথে, আপনি বুঝতে পারেন যে এই সম্পর্কের মূল্য কতটা ছিল, এবং সেই স্মৃতিগুলো আপনাকে জীবনের বাকি পথচলায় শক্তি যোগায়। বেস্ট ফ্রেন্ড হারানোর যন্ত্রণা আপনার জীবনের একটা বিশেষ অংশের সমাপ্তি, কিন্তু সেই বন্ধনের শক্তি এবং স্মৃতি আপনাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করে জীবনে এগিয়ে যেতে।
উপসংহার
বেস্ট ফ্রেন্ড আমাদের জীবনের এমন একজন মানুষ, যিনি সব সময় পাশে থেকে আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আরও আনন্দময় এবং অর্থবহ করে তোলেন। তার সাথে সম্পর্ক শুধুমাত্র বন্ধুত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটি একটি গভীর এবং স্থায়ী বন্ধন, যা জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পার করতে সহায়ক হয়। তিনি আমাদের মানসিক শক্তি, প্রেরণা, এবং সুখের অন্যতম উৎস। জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে, বেস্ট ফ্রেন্ড সেই ব্যক্তি, যিনি আমাদের সমর্থন দেন, সঠিক পরামর্শ দেন, এবং আমাদের সঙ্গে সুখ-দুঃখের ভাগীদার হন। বেস্ট ফ্রেন্ডের গুরুত্ব কখনোই অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। এই বিশেষ সম্পর্ককে যত্নের সাথে লালন করা এবং একে মূল্যায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ জীবনের প্রতিটি পর্বে, একজন সত্যিকারের বেস্ট ফ্রেন্ড আমাদের পাশে থাকলে আমরা শুধু সফল এবং আনন্দময় জীবনই যাপন করতে পারি না, বরং একজন ভালো মানুষ হিসেবেও গড়ে উঠতে পারি। তাই, বেস্ট ফ্রেন্ডের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং সম্পর্কটি মজবুত রাখার চেষ্টা করা আমাদের জীবনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। যাদের বেস্ট ফ্রেন্ড নেই তারা আজই বন্ধু খোঁজা শুরু করে দিন। কারন বন্ধুত্বের উপকারিতা অপরিসীম, একজন বেস্টফ্রেন্ড মানে যতো ঝড়-ঝাপটাই আসুক, সে আজীবন বন্ধু, সত্যি বন্ধু হিসেবেই সাথে থাকবে। কারন, বন্ধুর সম্পর্ক হলো বিশ্বাস, সমর্থন, এবং একে অপরের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসার একটি দৃঢ় বন্ধন, যা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আনন্দ ও সাহস যোগায়।
তাই সজাগ থাকবেন কোনমতেই বেস্ট ফ্রেন্ড কে হারিয়ে ফেলা যাবেনা, যোগাযোগ না হোক তবুও বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে যেন কখনো বিচ্ছেদ না হয়। ত্রিভুজ প্রেমের ক্ষেত্রে প্রিয় বন্ধুর জন্য স্যাকরিফাইজ করুন। বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে টাকা পয়সা লেনদেনজনিত ব্যাপারে খুব ভালোভাবে বোঝাপড়া করুন। সাংসারিক জীবনে প্রবেশ করলে ব্যস্ততার মধ্যেও দুজন দুজনকে একটু সময় দেয়ার চেষ্টা করুন, অন্ততপক্ষে ফোনকলে খোজঁখবর নিন। জীবনসঙ্গীকে ফ্রেন্ডশিপের গুরুত্ব বুঝানোর চেষ্টা করুন। আর বিপরীত লিঙ্গের বেস্ট ফ্রেন্ড এর প্রেমে পড়া যাবেনা, প্রেম একতরফা হলে সেটা গোপন করুন। আপনার জীবনে অনেক বন্ধু জুটবে, শুভাকাঙ্ক্ষী জুটবে, প্রেমিকও অনেক জুটবে, জীবনসঙ্গীও জুটবে কিন্তু আপনি চাইলেও বেস্ট ফ্রেন্ড জুটবেনা। প্রেমিক, জীবনসঙ্গী কোন কারনে আপনাকে ছেড়ে গেলেও বেস্ট ফ্রেন্ড কোনদিনই আপনাকে ছেড়ে যাবেনা, আপনার ছায়া হয়ে আপনার সাথেই পথ চলবে। আপনি যদি সৌভাগ্যের অধিকারী হন তবে এক বা একাধিক বেস্ট ফ্রেন্ড আপনার জীবনে আসবে। আর একজন বেস্ট ফ্রেন্ডের নাম বন্ধু কখনোই আপনার মন থেকে মুছে যাবেনা। মনে রাখবেন- "একজন বেস্ট ফ্রেন্ড পাওয়া জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।"
সচরাচর-জিজ্ঞাস্য
১। প্রশ্নঃ বেস্ট ফ্রেন্ড মানে কি?
উত্তরঃ সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে বিশ্বাসী বন্ধুটিই হল বেস্ট ফ্রেন্ড। যে বন্ধুটি আপনার প্রায়োরিটি লিস্টের সবচেয়ে উপরের লিস্টে থাকে সেই বন্ধুটিই বেস্ট ফ্রেন্ড।
২। প্রশ্নঃ বেস্ট ফ্রেন্ড কতজন হতে পারে?
উত্তরঃ বেস্ট ফ্রেন্ড এক বা একাধিক সংখ্যক হতে পারে। তবে আপনার মনে তাদের প্রায়োরিটি একেক জনের ক্ষেত্রে ভিন্ন।
৩। প্রশ্নঃ বেস্ট ফ্রেন্ড ডে কত তারিখ?
উত্তরঃ আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক ও জাতীয়ভাবে বেস্ট ফ্রেন্ড ডে পালন করা হয়। জাতীসংঘের প্রস্তাবনা অনুযায়ী ৩০ জুলায় কে “বিশ্ব বন্ধু দিবস” হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশ এববং ভারতে আগষ্টের প্রথম রবিবার আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সেই হিসেবে ৪ আগষ্ট ২০২৪ হল আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস। আপনি যেকোন তারিখ উভয় তারিখ ফলো করে বন্ধুকে “হ্যাপি বেস্ট ফ্রেন্ড ডে” বা “হ্যাপি ফ্রেন্ডশিপ ডে“ এর উইশ জানাতে পারেন।
৪। প্রশ্নঃ ছেলে মেয়ে কি বন্ধুত্ব হয়?
উত্তরঃ আসলে ছেলে ও মেয়েতে শুধুমাত্র বন্ধুত্ব প্রকৃতি বিরুদ্ধ কারন মানুষ সৃষ্টিই হয়েছে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ নিয়ে। এটা একটা সহজাত প্রবৃত্তি তাই ছেলে মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব হলেও এর মধ্যে যৌন আকর্ষনজনিত একটা ক্রিয়া থাকবেই। উইলিয়াম শেক্সপীয়ার, হুমাযুন আহমেদের মতো বিখ্যাতরাও বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে বলেছেন যে, একজন ছেলে কখনো একজন মেয়ের বন্ধু হতে পারেনা। তবে আমার পার্সনাল মতামত হল- ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা সম্ভব যদি তাদের মধ্যে সমতা ও বোঝাপড়া থাকে। যদি দুজনের চিন্তাভাবনা, শখ, এবং আচরণে মিল থাকে, তাহলে বন্ধুত্ব স্থায়ী হতে পারে। তবে, এই বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে যৌন আকর্ষণ যেন উভয়ের মধ্যে সমস্যা তৈরি না করে এবং একটি পূর্বনির্ধারিত চুক্তি থাকতে হবে যে, তারা কখনোই একে অপরের প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ করবে না। এই শর্তগুলো মেনে চললে ছেলে-মেয়ের বন্ধুত্ব সফল হতে পারে।
Feriwala এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
0 Comments