ল অব অ্যাট্রাকশন (Law of Attraction)
ল অব অ্যাট্রাকশন একটি আধ্যাত্মিক নীতি, যা বলে যে আমাদের চিন্তা, অনুভূতি, এবং মনোযোগ জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোর উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এটি বিশ্বাস করে যে, আমরা যা ভাবি এবং যেভাবে অনুভব করি, তা-ই আমরা আমাদের জীবনে আকর্ষণ করি। যদি আমরা ইতিবাচক চিন্তা এবং আবেগ নিয়ে জীবনযাপন করি, তাহলে আমরা ইতিবাচক ঘটনাবলী, সফলতা, এবং সুখ আকর্ষণ করতে পারি। অপরদিকে, নেতিবাচক চিন্তা এবং চিন্তার শক্তি আমাদের জীবনে কষ্ট ও অসুবিধা এনে দেয়। ল অব অ্যাট্রাকশন মতে, আপনি আপনার ভবিষ্যত গড়ে তোলার ক্ষমতা রাখেন শুধুমাত্র আপনার মননশক্তি এবং আবেগের মাধ্যমে। প্রথম পর্বে ল অব অ্যাট্রাকশন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ল অব ভাইব্রেশন । Image by Gerd Altmann from Pixabay |
[ল অব অ্যাট্রাকশন তিন পর্বের সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব উপস্থাপন করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে প্রথম পর্বে “ল অব অ্যাট্রাকশন” নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই পর্বে থাকবে "ল অব ভাইব্রেশন" নিয়ে বিস্তারিত তাত্ত্বিক আলোচনা এবং তৃতীয় ও শেষ পর্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ল অব অ্যাট্রাকশনের ব্যবহারিক পদ্ধতিগুলোর বিস্তারিত।]
ল অব অ্যাট্রাকশন কাজ করে কিভাবে?
ল অব অ্যাট্রাকশন একটি শক্তিশালী আধ্যাত্মিক নীতি যা বলে যে আমাদের চিন্তা, অনুভূতি, এবং বিশ্বাস আমাদের জীবনের অভিজ্ঞতাকে আকর্ষণ করে। এটি বিশ্বাস করে যে আমরা যে ধরনের শক্তি বা কম্পন ছড়াচ্ছি, তা-ই আমাদের চারপাশের বাস্তবতা গঠন করে। যখন আমরা ইতিবাচক চিন্তা ও অনুভূতিতে থাকি, তখন আমাদের মানসিক শক্তি আমাদের আকাঙ্ক্ষাগুলিকে আকৃষ্ট করতে সাহায্য করে। এটি প্রথমত শুরু হয় আমাদের ইচ্ছা বা লক্ষ্য স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করার মাধ্যমে। আমরা যখন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করি এবং সেই বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করি, তখন আমরা ইতিবাচক ভাইব্রেশন তৈরি করি। এরপর, আমাদের বিশ্বাস থাকতে হবে যে আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এটি করার সময়, ভিজুয়ালাইজেশন বা কল্পনার মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্যকে আমাদের মনের চোখে দেখতে পারি, যা আমাদের আবেগকে আরো শক্তিশালী করে। পাশাপাশি, কৃতজ্ঞতার চর্চা আমাদের জীবনে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ বাড়ায়, কারণ যখন আমরা আমাদের জীবনের জন্য কৃতজ্ঞ থাকি, তখন আমরা আরো ইতিবাচক অভিজ্ঞতা আকর্ষণ করি। ল অব অ্যাট্রাকশন তখন কার্যকরী হয় যখন আমরা আমাদের চিন্তা ও আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি এবং তাদেরকে আমাদের লক্ষ্য এবং ইচ্ছার সাথে মিলিয়ে ফেলতে পারি। সুতরাং, যখন আমরা ধৈর্য ধরে এবং আস্থার সাথে এই প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাই, তখন আমাদের জীবন পরিবর্তনের জন্য একটি নতুন পথ খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়, যা আমাদের স্বপ্ন পূরণের দিকে নিয়ে যায়।
ল অব ভাইব্রেশন (Law of Vibration)
"ল অব ভাইব্রেশন" বা "Law of Vibration" একটি গভীর তত্ত্ব, যা বলে যে মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু, প্রাণী, এবং চিন্তাভাবনা সবই একটি নির্দিষ্ট কম্পনে (Vibration) রয়েছে। এটি কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান, আধ্যাত্মিকতা এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নের মধ্যকার একটি ধারণা যা বলে যে সবকিছুই শক্তির দ্বারা গঠিত, এবং শক্তি স্থির নয়, বরং সবসময়ই কম্পন করছে। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে প্রতিটি পরমাণু, প্রতিটি কণা, এমনকি শূন্যস্থানও কম্পিত হচ্ছে। সেই কারণে, কিছু লোক বিশ্বাস করে যে মহাবিশ্বের প্রতিটি পদার্থ এবং চিন্তা একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে কম্পন করে। এই ফ্রিকোয়েন্সিগুলো আমাদের চারপাশের পরিবেশের সাথে সংযোগ তৈরি করে, এবং এর মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন অভিজ্ঞতা আকর্ষণ করতে সক্ষম হই।
"ল অব ভাইব্রেশন" অনুসারে, মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু, উদ্ভিদ, প্রাণী, এবং এমনকি চিন্তাধারাও একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে কম্পন করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে আপনি যা দেখছেন, শুনছেন, অনুভব করছেন বা চিন্তা করছেন তা সবই নির্দিষ্ট কম্পন দ্বারা প্রভাবিত। আমাদের অনুভূতি এবং চিন্তাধারা একইভাবে কম্পন করে এবং আমরা যেভাবে এই ভাইব্রেশনগুলোর সাথে মিথস্ক্রিয়া করি তা আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে।
মানুষ যা চিন্তা করে যেমন চিন্তা করে মহাজাগতিক শক্তি আর অবচেতন মন তাকে সেভাবেই চালনা করে। আবেগে, রাগে, দুঃখে মানুষ অনেক সময়ই নেগেটিভ চিন্তা বা ধারনা বা কল্পনা করে। এমন অবস্থায় অবচেতন মন ঐ নেগেটিভটাকেই পজিটিভ ধরে নিয়ে সেটাকে বাস্তবায়ন করে। আবার পজিটিভ চিন্তাভাবনা বা কল্পনাকে পজিটিভলি মনে করে সেটাকে বাস্তবায়ন করে। মূলকথা হলো অবচেতন মন নেগেটিভ পজিটিভ বোঝেনা, তাকে যা ইনপুট দেয়া হয় সে সেই মোতাবেক আউটপুট দেয়। এটাই হলো ল অব ভাইব্রেশনের মূল কথা।
ল অব ভাইব্রেশন কাজ করে কিভাবে?
ল অব ভাইব্রেশন একটি মৌলিক নীতি যা বলে যে সবকিছুই কম্পনের মাধ্যমে কাজ করে—মানুষ, চিন্তা, অনুভূতি, এবং বস্তু। প্রতিটি জিনিস একটি নির্দিষ্ট কম্পন স্তর ধারণ করে, যা তাদের শক্তি এবং বাস্তবতার সাথে সম্পর্কিত। যখন আমরা একটি নির্দিষ্ট অনুভূতি বা চিন্তা সৃষ্টি করি, তখন সেই অনুভূতি বা চিন্তা একটি নির্দিষ্ট কম্পন নির্গত করে, যা আমাদের চারপাশের বিশ্বে প্রতিফলিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা সুখী এবং ইতিবাচক চিন্তা করি, তাহলে আমাদের কম্পন উচ্চতর হয়, যা আমাদের জীবনে আরো ইতিবাচক ঘটনা ও অভিজ্ঞতা আকর্ষণ করে। অপরদিকে, নেতিবাচক চিন্তা ও অনুভূতি আমাদের কম্পনকে হ্রাস করে এবং নেতিবাচক অভিজ্ঞতাকে আকর্ষণ করে। ল অব ভাইব্রেশন কার্যকরী হয় যখন আমরা আমাদের চিন্তা ও অনুভূতিগুলোর প্রতি সচেতন থাকি এবং সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এটি আমাদের জন্য সুযোগ তৈরি করে, কারণ যখন আমরা উচ্চতর ভাইব্রেশনে থাকি, তখন আমাদের জীবনে ইতিবাচকতা, প্রেম এবং সাফল্য সহজে প্রবাহিত হয়। এছাড়া, ভাইব্রেশন বাড়ানোর জন্য ধ্যান, কৃতজ্ঞতা, এবং ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি করার মতো কার্যক্রম আমাদের কম্পনকে শক্তিশালী করতে সহায়ক। তাই, ল অব ভাইব্রেশন আমাদের জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে এবং আমাদেরকে আমাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করে।
ল অব অ্যাট্রাকশন ও ল অব ভাইব্রেশন এর মধ্যে সম্পর্ক
ল অব অ্যাট্রাকশন ও ল অব ভাইব্রেশন একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত এবং জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ল অব অ্যাট্রাকশন অনুযায়ী, আপনি যা ভাবেন, অনুভব করেন এবং যার উপর মনোযোগ দেন, তা-ই আপনি আকর্ষণ করেন। আপনার মানসিক শক্তি ও ইতিবাচক চিন্তা আপনার জীবনে সফলতা, সম্পর্ক, এবং স্বপ্ন পূরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, ল অব ভাইব্রেশন বলে যে এই পৃথিবীর প্রতিটি বস্তু ও চিন্তা একটি নির্দিষ্ট কম্পনে (Vibration) কাজ করে। আপনি যদি ইতিবাচক কম্পন বা ভালোবাসার কম্পনে থাকেন, তাহলে আপনার জীবনে ইতিবাচক শক্তি, সফলতা ও সুখ আকর্ষণ করবেন। আপনি যে আবেগ অনুভব করছেন বা যা চিন্তা করছেন, সেটাই আপনার শরীর এবং মন থেকে নির্গত একটি কম্পন সৃষ্টি করে। এই কম্পনের শক্তি বিশ্বজগতের অন্যান্য শক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করে। আপনার জীবনযাত্রার মানসিক অবস্থা যদি উচ্চতর, ইতিবাচক কম্পন তৈরি করে, তাহলে আপনি সেই কম্পন অনুযায়ী অভিজ্ঞতা আকর্ষণ করবেন। ল অব অ্যাট্রাকশন এর সাথে এখানেই সংযোগ ঘটে, কারণ এটি বলে যে আপনি যেভাবে চিন্তা করেন বা যা কল্পনা করেন, তা-ই আপনার জীবনে টেনে আনবেন। যদি আপনার চিন্তা ইতিবাচক হয় এবং আপনার কম্পন উচ্চ থাকে, তাহলে আপনি ইতিবাচক অভিজ্ঞতা আকর্ষণ করবেন; একইভাবে, নেতিবাচক চিন্তা বা কম্পন আপনাকে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার দিকে নিয়ে যাবে। সুতরাং, ল অব ভাইব্রেশন হল সেই ভিত্তি, যার ওপর ল অব অ্যাট্রাকশন কাজ করে। আপনি যে ধরনের কম্পন ছড়িয়ে দেন, সেটাই আপনার আকর্ষণের শক্তি নির্ধারণ করে। মূলত, ল অব ভাইব্রেশন আমাদের অভ্যন্তরীণ অবস্থা এবং বাইরের অভিজ্ঞতার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যেখানে ল অব অ্যাট্রাকশন সেই অভ্যন্তরীণ কম্পনের প্রতিফলন হিসেবে আমাদের জীবনে অভিজ্ঞতাগুলোকে নিয়ে আসে।
এই দুই নীতির মাধ্যমে আপনি আকর্ষণের শক্তি কাজে লাগিয়ে আপনার জীবনের মান উন্নত করতে পারেন। আপনার ইতিবাচক চিন্তা শক্তি, সচেতন জীবনযাপন, এবং মানসিক শক্তি মিলে স্ব-উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে। ল অব অ্যাট্রাকশন এবং ল অব ভাইব্রেশন ব্যবহার করে আপনি অর্থ, প্রেম, এবং ভবিষ্যৎ পরিবর্তন আনতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ম্যানিফেস্টেশন টেকনিক ব্যবহার করে আপনি আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। যদি আপনি জানেন ভাইব্রেশন কীভাবে বাড়ানো যায়, তাহলে আপনি জীবন বদলানোর জন্য শক্তিশালী অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবেন, যা আপনাকে সফলতার দিকে নিয়ে যাবে। আধ্যাত্মিকতা ও আকর্ষণের নিয়ম জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে, এবং আপনি যদি সঠিক কৌশলগুলো জানেন, যেমন ল অব ভাইব্রেশন দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে প্রয়োগ করবেন এবং ল অব অ্যাট্রাকশন ব্যবহার করে প্রেম জীবন বা অর্থ আকর্ষণ করবেন, তাহলে আপনি দ্রুত জীবন পরিবর্তনের উপায় পেতে পারেন। তাই, ল অব অ্যাট্রাকশন ও ল অব ভাইব্রেশন হলো জীবনের গোপন কৌশল যা আপনার জীবন বদলের কৌশল হিসেবে আপনাকে আপনার লক্ষ্য ও স্বপ্ন পূরণের পথে নিয়ে যেতে সহায়তা করে।
দৈনন্দিন জীবনে ল অব ভাইব্রেশনের প্রভাব
"ল অব ভাইব্রেশন" তত্ত্বটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোর ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। আমাদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে আমরা নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সির কম্পন তৈরি করি, যা আমাদের জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ:
- ইতিবাচক চিন্তা ও ফ্রিকোয়েন্সি: যখন আমরা ইতিবাচক চিন্তা করি, আমরা উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির কম্পন তৈরি করি। এটি ইতিবাচক অভিজ্ঞতা, সাফল্য এবং আনন্দ আকর্ষণ করতে সহায়ক।
- নেতিবাচক চিন্তা ও কম্পন: যখন আমরা নেতিবাচক চিন্তা করি, আমরা নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সির কম্পন তৈরি করি। এটি ব্যর্থতা, অসুবিধা এবং দুঃখ আকর্ষণ করতে পারে।
- পরিবেশ ও সম্পর্ক: আমাদের আশেপাশের লোকজনের ভাইব্রেশন আমাদের নিজেদের কম্পনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। যদি আমরা এমন লোকদের সাথে সময় কাটাই যারা ইতিবাচক এবং উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির কম্পনে থাকে, তাহলে আমাদের নিজের ভাইব্রেশনও উন্নত হবে।
ল অব ভাইব্রেশনের রূপ
"ল অব ভাইব্রেশন" বা কম্পনের সূত্রের বিভিন্ন রূপ বা প্রকার রয়েছে, যেগুলো জীবনের বিভিন্ন দিক এবং অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতিটি রূপই কম্পনের তত্ত্বের ভিন্ন ভিন্ন দিককে নির্দেশ করে এবং এর মাধ্যমে জীবনের নানা অভিজ্ঞতাকে আকৃষ্ট করা যায়। এখানে "ল অব ভাইব্রেশন" এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ রূপ তুলে ধরা হলো:
শারীরিক বা পদার্থিক কম্পন (Physical Vibration):
শারীরিক বা পদার্থিক কম্পন হচ্ছে আমাদের শরীর ও পদার্থের শক্তি তরঙ্গ, যা একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে কম্পিত হয়। আমাদের দৈনন্দিন শারীরিক অবস্থান, স্বাস্থ্য এবং শক্তির উপর ভিত্তি করে এই কম্পন পরিবর্তিত হয়। শরীরের কম্পন উন্নত করতে আমরা স্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়াম এবং সুস্থ জীবনযাপনের উপর মনোনিবেশ করতে পারি। উদাহরণ: স্বাস্থ্যকর খাবার এবং শরীরচর্চা করার মাধ্যমে নিজের শারীরিক শক্তি বাড়ানো, সুস্থ জীবনযাপন এবং বিশ্রামের মাধ্যমে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির কম্পন ধরে রাখা ইত্যাদি।মানসিক কম্পন (Mental Vibration):
এটি আমাদের চিন্তা, ধারণা, এবং মনের অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয়। ইতিবাচক চিন্তা এবং মানসিকতা উচ্চ মানের কম্পন সৃষ্টি করে, যা আমাদের জীবনে ভালো অভিজ্ঞতা আকর্ষণ করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, নেতিবাচক চিন্তা ও মানসিক চাপ নিম্ন কম্পন তৈরি করে, যা নেতিবাচক অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারে। উদাহরণ: ইতিবাচক চিন্তা এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নিজের মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করা, নেতিবাচকতা এড়িয়ে মনকে প্রশান্ত রাখা ইত্যাদি।আবেগিক বা মানসিক কম্পন (Emotional Vibration):
আমাদের আবেগ এবং অনুভূতিগুলো সরাসরি আমাদের কম্পনের মাত্রাকে প্রভাবিত করে। আমরা যখন সুখী, ভালোবাসায় পূর্ণ, বা কৃতজ্ঞতার অনুভূতি রাখি, তখন আমাদের কম্পনের ফ্রিকোয়েন্সি বেড়ে যায় এবং আমরা ভালো অভিজ্ঞতা আকর্ষণ করি। বিপরীতে, রাগ, হতাশা, বা দুঃখ কম্পনের নিম্ন স্তর তৈরি করে। উদাহরণ: কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা এবং সহানুভূতির চর্চা করে আবেগিক কম্পন বৃদ্ধি করা, রাগ ও হতাশার মতো নেতিবাচক আবেগ এড়িয়ে ইতিবাচক আবেগকে জাগিয়ে তোলা ইত্যাদি।আধ্যাত্মিক কম্পন (Spiritual Vibration):
আধ্যাত্মিক কম্পন আমাদের আত্মা বা অন্তর্দৃষ্টির সাথে সম্পর্কিত। মেডিটেশন, প্রার্থনা, এবং আধ্যাত্মিক চর্চা আধ্যাত্মিক কম্পন বাড়াতে সহায়ক। যখন কেউ আধ্যাত্মিকভাবে সংযুক্ত থাকে এবং শান্তিপূর্ণ থাকে, তখন তার কম্পন উচ্চ থাকে, যা জীবনের বিভিন্ন ইতিবাচক অভিজ্ঞতা আকর্ষণ করতে সহায়ক হয়। উদাহরণ: মেডিটেশন এবং আধ্যাত্মিক চর্চার মাধ্যমে অন্তর্দৃষ্টি এবং শান্তি অর্জন, প্রার্থনা বা আধ্যাত্মিক শিক্ষার মাধ্যমে উচ্চতর কম্পন তৈরি করা ইত্যাদি।সম্পর্ক বা সামাজিক কম্পন (Relational or Social Vibration):
মানুষের সাথে আমাদের সম্পর্ক এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া কম্পনকে প্রভাবিত করে। আপনি যাদের সাথে সময় কাটান, তাদের কম্পন আপনার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ইতিবাচক ও উচ্চ কম্পনের মানুষদের সাথে সময় কাটালে আপনার কম্পনও বাড়ে, এবং নেতিবাচক পরিবেশে থাকলে তা কমে যায়। উদাহরণ: ইতিবাচক, উচ্চ কম্পনের মানুষের সাথে সময় কাটানো, নেতিবাচক সম্পর্ক ও পরিবেশ থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি।সৃষ্টি বা সৃজনশীল কম্পন (Creative Vibration):
সৃজনশীলতা আমাদের মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশকে সক্রিয় করে, যা উচ্চ কম্পনের সৃষ্টি করে। যারা সৃজনশীল কাজে যুক্ত থাকেন, তারা সাধারণত উচ্চ কম্পনে কাজ করেন এবং তাদের জীবনেও সৃজনশীলতা, সাফল্য ও আনন্দ আকর্ষিত হয়। উদাহরণ: সৃজনশীল কাজ, যেমন লেখা, চিত্রাঙ্কন বা সংগীত চর্চা করা, নতুন আইডিয়া এবং উদ্ভাবন করার মাধ্যমে নিজের সৃজনশীল কম্পন বাড়ানো ইত্যাদি।উপসংহারে
আত্ম-উন্নয়ন কৌশল এবং কম্পনের নিয়ম অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারেন। জীবন বদলানোর উপায়গুলো বাস্তবায়ন করে, যেমন জীবন বদলানোর জন্য দ্রুত উপায় খুঁজে বের করা, আপনার স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম করতে পারে। ভালোবাসার কম্পন এবং ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে ম্যানিফেস্টিং প্রক্রিয়াটি আরো কার্যকরী হয়। সফলতার টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জনে আরও সাহায্য পেতে পারেন। সুতরাং, এই গোপন কৌশলগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার জীবনকে নতুন আঙ্গিকে সাজাতে পারেন এবং অভীষ্ট সাফল্য অর্জন করতে পারেন। ল অব অ্যাট্রাকশন এবং ল অব ভাইব্রেশন আপনাকে আপনার স্বপ্ন পূরণের পথে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে, যদি আপনি এই নীতিগুলোকে আপনার দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করেন।
পরিশেষে, ল অব ভাইব্রেশনের উপর ভিত্তি করে ল অব অ্যাট্রাকশন কাজ করে, যা স্বপ্ন পূরণের গোপন কৌশল হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
ল অব অ্যাট্রাকশন: সফল হওয়ার পদ্ধতিসমূহ (তৃতীয় ও শেষ পর্ব)
Feriwala এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
0 Comments