Feriwala - Inspiring Heart and Lives

Header Ads Widget

নেশাঃ কারণ, প্রভাব ও মুক্তির উপায়

নেশা 

নেশার ফিলিংস নিয়ে হাজারো কবি কবিতা লিখেছেন। বিখ্যাত সংগীত গজলের প্রধান বিষয় হলো নেশার ফিলিংস নিয়ে। হাজারো নেশা নিয়ে উক্তি অনলাইনে সার্চ করলেই পাওয়া যাবে। কি নেশায় জড়ালে, কি নেশা ছড়ালে, নেশা হি নেশা হ্যায় ইত্যাদি গান বা নাটক সে যাই হোক না কেন নেশা আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি শব্দ। তবে আমরা যাকে নেশা বলে মনে করছি সেটা আদৌও নেশা কিনা এই ব্লগের শেষে জানতে ও বুঝতে পারবো।

নেশা (Intoxication)
নেশা (Intoxication) by Pexels.com


নেশা (Intoxication) হলো একটি মানসিক ও শারীরিক অবস্থা, যেখানে ব্যক্তি একটি নির্দিষ্ট পদার্থ বা কার্যকলাপের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। এই আসক্তি এতটাই প্রবল হয় যে ব্যক্তিটি তার দৈনন্দিন জীবন, সম্পর্ক এবং স্বাস্থ্যকে উপেক্ষা করে সেই পদার্থ বা কাজটি করতে থাকে। এটি স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং ব্যক্তি সেই পদার্থ বা কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে পারে না। নেশা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন মাদকাসক্তি, ধূমপান, ড্রাগের নেশা, প্রযুক্তি আসক্তি ইত্যাদি। নেশা সাধারণত মাদক, ঔষধ বা অ্যালকোহলের প্রভাবের অধীনে থাকা অবস্থাকে বোঝায়, যেখানে একজনের মানসিক বা শারীরিক ক্ষমতা দুর্বল হয়। এটি বিভিন্ন উপায়ে উদ্ভাসিত হতে পারে যা গ্রহণ করা পদার্থ এবং এর মাত্রার উপর নির্ভর করে। নেশার আইনি, সামাজিক এবং স্বাস্থ্যগত প্রভাব আছে। নেশাদ্রব্য গ্রহণের পরিণাম হিসাবে মানসিক অথবা শারীরিক অবস্থা পরিবর্তিত হতে পারে, যার ফলে বিশেষভাবে ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ, সচেতনতা এবং নির্ধারণের সামর্থ্য কমে যেতে পারে। 


ক্ষনিকের তৃপ্ততা উপলব্ধি করা বা সুখ অনুভব করার লক্ষ্যে যখন কোনো মাদক বা ড্রাগ জাতীয় পদার্থ গ্রহন করার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে, এই প্রক্রিয়াকেই নেশা বলা হয়। নেশা হলো একটি অস্থায়ী এবং বিপরীত অবস্থা যা একজন ব্যক্তি তার মেজাজ এবং ক্ষমতা পরিবর্তন করতে ভূমিকা রাখে। নেশা সরাসরি মানুষের বিচার বিবেচনাবোধ, স্পষ্টভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা এবং আচরণকে প্রভাবিত করে। অনিয়মিত ও সীমিত নেশা মানুষের আচরণ বা জীবনধারায় তেমন প্রভাব বিস্তার করেনা কিন্তু ঐ নেশা আসক্তি তে পরিণত হলে সেটা ক্ষতিকারক যা ব্যবহারকারীর মানসিক ও শারিরীক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে এমনকি অন্যের জীবনেও খারাপ প্রভাব বিস্তার করে। নেশা অভ্যাসজনিত কারনে আসক্তিতে পরিণত হলেই তাকে নেশাগ্রস্ত মানুষ বলে অভিহিত করা হয়।


নেশার কারণ

নেশা একটি জটিল সমস্যা, যার একক কোনো কারণ নেই। একাধিক জৈবিক, মানসিক ও পরিবেশগত কারণ মিলে একজন ব্যক্তিকে নেশার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এটি ব্যক্তির পরিস্থিতি, সংস্কার, মানসিক অবস্থা এবং সম্পর্কিত পরিস্থিতি উপর নির্ভর করে। মানুষ নিজের ভালোলাগার অনুভূতিকে সাময়িক বাড়িয়ে তুলতে বা কষ্ট থেকে সাময়িকভাবে মুক্তি পেতেও নেশায় জড়িয়ে পড়ে। আবার অজানাকে জানতে চাওয়া বা কৌতুহলের বসে বা সঙ্গদোষেও অনেকে নেশায় জড়িয়ে পড়ে। মানুষের নেশা যখন আসক্তিতে পরিণত হয় তখন বার বার সে কাজটি-ই কেবল করতে থাকে, আর মনে করতে থাকে এটিই একমাত্র কাজ যা তাকে প্রশান্তি দেবে। নেশা করার মৌলিক কারণগুলো নিম্নরূপঃ

  • সামাজিক প্রভাবঃ অনেক সময় সমাজের চাপ বা সামাজিক পরিবেশে মাদকের প্রচার বা অন্যের সঙ্গ, প্ররোচনা, অনুরোধের ফলে মানুষ নেশা করতে প্রবৃদ্ধি করতে পারে।
  • পারিবারিক প্রভাবঃ পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সমাজের চাপ, যৌন হয়রানি, সহিংসতা ইত্যাদি কারণে মানুষ নেশার দিকে ঠেলে পড়তে পারে। 
  • পরিবেশগত প্রভাবঃ যুদ্ধ, দারিদ্র্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি পরিবেশগত কারণগুলিও নেশার কারণ হতে পারে।
  • মানসিক সমস্যাঃ বিভিন্ন মানসিক অবস্থা যেমন অতিসংযোগ (অন্যের প্রতি অতিরিক্ত চাওয়া বা বেশি আপন ভাবা), অতিসহযোগ (অন্যের কাছ থেকে অতিরিক্ত সাহায্য বা মনোযোগের আশা), উদ্বেগ, ডিপ্রেশন, একাকিত্ব, আত্মবিশ্বাসের অভাব ইত্যাদি সহ অন্যান্য মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই নেশায় জড়িয়ে পড়েন।
  • জেনেটিকঃ পরিবারে যদি কারো নেশার ইতিহাস থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তির নেশাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। জিনগত কারণগুলি মস্তিষ্কের রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলিকে প্রভাবিত করে, যা নেশার প্রতি সহনশীলতা বাড়াতে পারে।
  • সেলিব্রেশনঃ কোন আনন্দঘন মুহূর্ত সেলিব্রেট করতে মানুষ নেশা করতে পারে। অনেকেই প্রথমে মজার জন্য বা উত্তেজনা পাওয়ার জন্য নেশা শুরু করেন, যা পরে আসক্তিতে পরিণত হয়।
  • আত্মবিশ্বাসের অভাবঃ কেউ আত্মবিশ্বাসের অভাবে বা নিজের প্রতি সন্তুষ্ট না থাকলে তারা নেশা বা মাদক ব্যবহার করতে পারে।
  • কাজের ব্যর্থতাঃ মানুষ কোন কাজে ব্যর্থ হলে ব্যর্থতার কষ্ট ভুলতে নেশা করতে পারে।
  • প্রেমঘটিতঃ প্রেমঘটিত কষ্ট থেকে বা প্রিয়জনকে ভুলতে মানুষ নেশা করতে পারে। 
  • অজ্ঞতাঃ নেশার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জ্ঞান বা সচেতনতার অভাবও অনেক সময় নেশার দিকে ঠেলে দেয়।
  • সহজলভ্যতাঃ মাদকদ্রব্য বা আসক্তি সৃষ্টিকারী অন্যান্য পদার্থের সহজলভ্যতা নেশার একটি বড় কারণ হতে পারে।
  • মস্তিষ্কের রাসায়নিক পরিবর্তনঃ নেশার পদার্থ সেবন করার ফলে মস্তিষ্কের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরিবর্তন হয়, যা নেশার প্রতি আসক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।


নেশার এই কারণগুলি একসাথে কাজ করতে পারে এবং এটি ব্যক্তির পরিস্থিতি অনুযায়ী বিভিন্ন রূপে প্রভাবিত হতে পারে। সময়ের সাথে সাথে এটি একটি গভীর আসক্তির রূপ নিতে পারে। আরো অনেক কারনেই মানুষ নেশায় জড়িয়ে পড়ে তবে উপরোক্ত কারগুলোই প্রধান।


নেশা এবং মস্তিষ্কঃ একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

নেশা একটি জটিল সমস্যা যা মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার এবং রিওয়ার্ড সিস্টেমের সাথে গভীরভাবে জড়িত। যখন কেউ কোনো নেশাজাতীয় পদার্থ সেবন করে বা কোনো আসক্তিমূলক কাজ করে, তখন মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থের মাত্রা বেড়ে যায়। ডোপামিন হলো মস্তিষ্কের একটি প্রাকৃতিক রিওয়ার্ড সিস্টেমের অংশ, যা খাদ্য, যৌনতা এবং অন্যান্য আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতার জন্য দায়ী। নেশার সময় মস্তিষ্কে যে পরিবর্তনগুলি ঘটে তা বৈজ্ঞানিকভাবে জটিল এবং নানা ধরনের। সাধারণভাবে, নেশার প্রক্রিয়া মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলে এবং স্নায়বিক রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:


নেশা কেন হয়? নেশা কীভাবে কাজ করে?

ডোপামিন রিলিজ

  • ডোপামিনের অতিরিক্ত নিঃসরণঃ মাদকদ্রব্য ব্যবহারে মস্তিষ্কের পুরস্কার কেন্দ্র, বিশেষ করে নিউক্লিয়াস আকম্বেন্স (nucleus accumbens) এবং ভেন্ট্রাল তাম্বুলার (ventral tegmental area) অঞ্চলে ডোপামিন নামক স্নায়বিক রাসায়নিকের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই অতিরিক্ত ডোপামিন মস্তিষ্কে সুখের অনুভূতি তৈরি করে যা ব্যক্তিকে আবারও সেই পদার্থ সেবন করতে বা সেই কাজ করতে প্রেরণ করে।। সময়ের সাথে সাথে মস্তিষ্ক এই অতিরিক্ত ডোপামিনের প্রতি সহনশীল হয়ে ওঠে। এর মানে হলো, একই আনন্দ পেতে ব্যক্তিকে আরও বেশি পরিমাণে নেশাজাতীয় পদার্থ সেবন করতে হয়। যখন ব্যক্তি নেশাজাতীয় পদার্থ সেবন করা বন্ধ করে দেয়, তখন ডোপামিনের মাত্রা হঠাৎ কমে যায়। এর ফলে ব্যক্তি বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করতে পারে। এই অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ব্যক্তি আবারও নেশাজাতীয় পদার্থ সেবন করতে বাধ্য হয়।
  • ডোপামিন রিসেপ্টরসঃ মাদকদ্রব্য নিয়মিত ব্যবহারে ডোপামিন রিসেপ্টরগুলির কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে, যা মাদক গ্রহণ ছাড়া সুখের অনুভূতি কমিয়ে দেয়।


মস্তিষ্কের কাঠামোগত পরিবর্তন

  • অগ্রগতির ক্ষমতাঃ মাদকদ্রব্যের প্রভাব মস্তিষ্কের অগ্রগতির অংশে (Prefrontal Cortex) পরিবর্তন ঘটাতে পারে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ, আত্মনিয়ন্ত্রণ, এবং পরিকল্পনা সক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
  • মেমরি ও শেখার ক্ষমতাঃ মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস (Hippocampus) এবং অন্যান্য অংশে পরিবর্তন ঘটতে পারে, যা মেমরি এবং শেখার ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে।


স্নায়বিক যোগাযোগের পরিবর্তন

  • স্নায়বিক সংযোগঃ মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে স্নায়বিক সংযোগে পরিবর্তন ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে যোগাযোগ কমে যেতে পারে, যা আচরণগত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।


স্নায়বিক রাসায়নিকের ভারসাম্যহীনতা

  • সারোটোনিন ও গ্যাবাঃ মাদকদ্রব্য ব্যবহারে সারোটোনিন ও গ্যাবার মতো অন্যান্য স্নায়বিক রাসায়নিকের ভারসাম্য হ্রাস পেতে পারে, যা মস্তিষ্কের মেজাজ, উদ্বেগ এবং আচরণকে প্রভাবিত করে।


নিউরোপ্লাস্টিসিটি

  • মস্তিষ্কের পুনর্গঠনঃ দীর্ঘমেয়াদি মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের নিউরোপ্লাস্টিসিটি (Neuroplasticity) পরিবর্তিত হতে পারে, যা মস্তিষ্কের কাঠামো ও কার্যকারিতা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।


এই বৈজ্ঞানিক পরিবর্তনগুলি মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্তির অনুভূতি এবং আচরণগত পরিবর্তনের জন্য দায়ী। নেশা একটি রোগ এবং এর জন্য কাউকে দোষ দেওয়া উচিত নয়। নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সহযোগিতা করা এবং তাকে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য উৎসাহিত করা উচিত।



নেশার প্রভাব

নেশা মানুষের জীবনে গুরুতর প্রভাব ফেলে। নেশার প্রভাব ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে, সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট করে, এবং অর্থনৈতিক ও আইনি সমস্যার সৃষ্টি করে। এটি জীবনের বিভিন্ন দিককে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে, যার ফলে ব্যক্তি ও তার আশেপাশের মানুষরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নেশার ক্ষতিকর প্রভাবগুলি নিম্নরূপঃ


শারীরিক প্রভাব

  • স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টিঃ নেশা শরীরের প্রায় সব অঙ্গকেই ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। মাদকাসক্তি বা অতিরিক্ত পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, যেমন লিভার রোগ, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, বা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াঃ নেশার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
  • স্বাভাবিক শারীরিক কার্যক্রমে বিঘ্নঃ শারীরিক শক্তি হ্রাস, ঘুমের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস, এবং দৈহিক দুর্বলতা।
  • প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়াঃ নেশা পুরুষ ও মহিলা উভয়ের প্রজনন ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
  • শারীরিক বিকৃতিঃ দীর্ঘদিন নেশা করলে শারীরিক বিকৃতি দেখা দিতে পারে।


মানসিক প্রভাব

  • মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টিঃ নেশা উদ্বেগ, ডিপ্রেশন, অতি সন্দেহপ্রবণতা অথবা মানসিক বিভ্রান্তি বা মানসিক ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে।
  • স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাশক্তির হ্রাসঃ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস, যা স্মৃতিশক্তি ও কেন্দ্রীকরণ ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
  • আক্রমণাত্মকতাঃ নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।


সামাজিক প্রভাব

  • পরিবারের সম্পর্ক নষ্ট হওয়াঃ নেশা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে এবং পরিবারের সুখ শান্তি নষ্ট করে। একটি পরিবারে একজন নেশাগ্রস্ত সদস্য থাকলে ঐ পরিবার ধংস হতে আর কিছুর প্রয়োজন নেই। কারন নেশার কারনে নেশাগ্রস্থদের হিতাহিত জ্ঞান তেমন থাকেনা, বিচার বিবেচনাবোধ, বিবেকবোধ ও ধৈর্যশক্তি কমে যায়, তাই পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি হয়।
  • সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হওয়াঃ নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি তার বন্ধুবান্ধব ও কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে।
  • আত্ম-সম্মান এবং সামাজিক মর্যাদাঃ নেশার কারণে আত্ম-সম্মান হ্রাস, সমাজে নেতিবাচক মনোভাবের সৃষ্টি এবং সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
  • আর্থিক সমস্যাঃ নেশা পূরণে অর্থ ব্যয় করে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা কঠিন হয়ে পড়ে।
  • কাজে অদক্ষতাঃ নেশার কারণে কাজে মনোযোগ দিতে পারা কঠিন হয়ে পড়ে এবং কর্মক্ষমতা কমে যায়।
  • স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপঃ নেশা সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়ে।
  • আইনি জটিলতাঃ মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবহার আইনি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি অর্থনৈতিক চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন অনৈতিক বা অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হতে পারে । যার ফলে গ্রেফতার, দণ্ড বা অন্যান্য আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে।
  • অর্থনৈতিক ক্ষতিঃ নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা কাজ করতে না পারায় অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।


এই প্রভাবগুলি একজন ব্যক্তির জীবনের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করে। নেশা শুধু ব্যক্তি নিজেকেই নয়, তার পরিবার, সমাজ এবং সমগ্র সমাজকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই নেশাগ্রস্তদের পুনরুদ্ধার বা সুস্থতার জন্য সঠিক সহায়তা ও চিকিৎসার প্রয়োজন।


নেশা থেকে মুক্তির উপায়

নেশা থেকে মুক্তি পাওয়া একটি জটিল প্রক্রিয়া, তবে সঠিক পদক্ষেপ ও সহায়তা নিয়ে নেশা নিরাময় করা সম্ভব। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা ধৈর্য ও সময়ের প্রয়োজন। নেশা থেকে বাঁচার উপায়গুলো হলোঃ


স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন 

  • নিয়মিত চেক-আপঃ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে শারীরিক স্বাস্থ্য মনিটর করুন।
  • অন্তর্নিহিত রোগের চিকিৎসাঃ যদি নেশার পেছনে কোনো অন্তর্নিহিত মানসিক বা শারীরিক সমস্যা থাকে, তবে সেগুলির চিকিৎসা করান।
  • ব্যায়াম ও খাদ্যঃ নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে।
  • স্বাস্থ্যকর রুটিনঃ নিয়মিত ঘুম ও বিশ্রাম নিশ্চিত করুন।


পেশাদার সহায়তা গ্রহণ

  • মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারঃ সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট, অথবা কাউন্সেলর দ্বারা পরামর্শ গ্রহণ করুন। তারা আপনাকে মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা এবং মনোরোগ চিকিৎসার পরিকল্পনা প্রদান করতে পারবেন। আত্মবিশ্বাস রাখুন, নেশা চিকিৎসার মাধ্যমে আসক্তি মুক্তি পেতে একটু ধৈর্যশীল হোন, সময়ের সাথে সাথে নেশার আসক্তি দূর হয়ে যাবে। 
  • রিহ্যাবিলিটেশন কেন্দ্রঃ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন প্রোগ্রাম, যেমন ইনপেশেন্ট বা আউটপেশেন্ট রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে ভর্তি হন। মাদক নিরাময় করতে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারগুলো খুক ভালো অবদান রাখতে পারে।


মুক্তির পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নির্ধারণ

  • পরিকল্পনা তৈরিঃ নেশা থেকে মুক্তির জন্য একটি স্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা তৈরি করুন। এতে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য, ধাপ ও সময়সীমা অন্তর্ভুক্ত করুন।
  • ছোট লক্ষ্যঃ বড় লক্ষ্য অর্জনের জন্য ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং এগুলো অর্জন করুন।


সামাজিক সমর্থন গড়ে তোলা

  • পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তাঃ পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সমর্থন আপনার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া সহজ করতে পারে।
  • সাপোর্ট গ্রুপঃ নেশা পুনরুদ্ধার সম্পর্কিত সাপোর্ট গ্রুপে অংশগ্রহণ করুন। সেখানে আপনি একই ধরনের অভিজ্ঞতার মানুষের সাথে কথা বলতে পারবেন।


স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন

  • অভ্যাস পরিবর্তনঃ স্বাস্থ্যের জন্য মন্দ অভ্যাস, যেমন- ধূমপানের নেশা, মদ্যপান সহ অন্যান্য মাদক আসক্তির অভ্যাস পরিবর্তন করে উপকারী অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করুন, যেমন নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য, এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম।
  • ট্রিগার চিহ্নিত করুনঃ নেশার কারণ হতে পারে এমন ট্রিগারগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো এড়ানোর চেষ্টা করুন।


মানসিক স্বাস্থ্য ও স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট

  • স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টঃ স্ট্রেস, উদ্বেগ, এবং মানসিক চাপ ম্যানেজমেন্টের জন্য বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করুন, যেমন মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম।
  • আবেগিক সহায়তাঃ মানসিক চাপ মোকাবেলার কৌশলগুলি শিখুন এবং প্রয়োগ করুন।


নতুন শখ ও আগ্রহ

  • নতুন শখঃ নতুন শখ বা আগ্রহ গড়ে তুলুন যা আপনার মনোযোগ নিবদ্ধ করবে এবং নেশার প্রতি আকর্ষণ কমাতে সাহায্য করবে।
  • পেশাগত উন্নয়নঃ নতুন দক্ষতা শেখা বা পেশাগত উন্নয়নে মনোনিবেশ করুন।


মুক্তির জন্য প্রস্তুতি

  • চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাঃ নেশা থেকে মুক্তির পথে চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, তাই নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখুন এবং সঠিক সহায়তা গ্রহণ করুন।
  • অনুপ্রেরণা বজায় রাখাঃ নিজেকে উৎসাহিত রাখুন এবং সফলতার উদযাপন করুন।


এছাড়াও এই নিবন্ধের পূর্ববর্তি নিবন্ধ “অভ্যাসঃ সফলতার চাবিকাঠি ও জীবন পরিবর্তনের পথ” ও “আসক্তিঃ কারণ, প্রভাব ও পুনরুদ্ধারের পথ” নিবন্ধে অভাস পরিবর্তন বা আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় বিস্তারিত পেতে পারেন।



নেশার লক্ষণ

নেশার কিছু সাধারণ দৃশ্যমান লক্ষণ রয়েছে। যদি একজন ব্যক্তি এই লক্ষণগুলোর মধ্যে মাত্র একটি বা দুটি দেখায় যার অর্থ এই নয় যে ব্যক্তি নেশাগ্রস্ত। কিন্তু যদি একজন ব্যক্তি বিভিন্ন লক্ষণের সংমিশ্রণ দেখায়, বা আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন হয়, তবে এটি একটি শক্তিশালী ইঙ্গিত হতে পারে যে ব্যক্তি নেশাগ্রস্ত। নেশাগ্রস্তের সাধারণ দৃশ্যমান লক্ষণগুলো নিম্নরূপঃ


চেহারা (Appearance)

  • রক্তক্ষরণ, গ্লাসযুক্ত বা জলযুক্ত চোখ।
  • রক্তিম মুখমন্ডল।
  • ঝুলে পড়া চোখের পাতা।
  • শূণ্য দৃষ্টি বা স্তব্ধ চেহারা।
  • শরীরে কাঁপুনি।
  • এলোমেলো পোশাক।


বক্তৃতা বা কথা বলা (Speech)

  • ঘন, ঝাপসা বক্তৃতা।
  • জোরে, কোলাহলপূর্ণ বক্তৃতা।
  • জোরে কথা বলা, তারপর শান্তভাবে কথা বলা।
  • এলোমেলো ও অসংলগ্ন কথা বলা।
  • অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত বা ধীর কথা বলা।
  • প্রশ্নের উত্তরে ধীর প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য।
  • পুনরাবৃত্তিমূলক বিবৃতি।
  • গর্ব করা।
  • অযৌক্তিক বিবৃতি তৈরি করা।


মনোভাব (Attitude)

  • অন্যদের বিরক্ত করা।
  • তর্ক করা।
  • আক্রমণাত্মক মনোভাব।
  • আপত্তিকর মনোভাব।
  • অস্বাভাবিক যৌনতা।
  • অন্যদের সাথে অত্যধিক বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব।
  • দাম্ভিকতা।


আচরণ (Behavior)

  • হেলে-দুলে হাটা, স্তব্ধ বা হোঁচট খাওয়া।
  • সোজা বসতে অক্ষম।
  • টাকা নিয়ে অসতর্ক।
  • আচরণ পরিবর্তন করতে অসুবিধা।
  • অস্থিরতা।
  • বিষণ্ণ বা বিষণ্ণতা।
  • কান্নাকাটি বা মুডি।
  • আচরণের মধ্যে চরম বা আকস্মিক পরিবর্তন।
  • অতিমাত্রায় বিনোদনমূলক।
  • অভদ্র, অনুপযুক্ত বক্তৃতা বা অঙ্গভঙ্গি।
  • তন্দ্রা বা ঘুমিয়ে পড়া।
  • ফোকাস এবং চোখের যোগাযোগের অভাব।
  • দাঁড়ানোতে অসুবিধা।
  • অস্বাভাবিক হাঁটা।
  • আয়নাতে নিজের চেহারা খুঁজে পাওয়া যায় না।
  • চেয়ার থেকে পড়ে যাওয়া বা অন্য কোন ভাবে পড়ে যাওয়া।
  • সিগারেট জ্বালাতে অসুবিধা।
  • একাধিক সিগারেট জ্বালানো।
  • আনাড়ী আচরণ করা।
  • মনে রাখতে অসুবিধা।
  • অসাবধানতবশতঃ পানীয় ফেলে দেওয়া।
  • দিশেহারা হওয়া।
  • উত্তেজিত, উদ্বিগ্ন হওয়া।
  • দাঁত কিড়মিড় করা।
  • বমি করা।


অন্যান্য (Others)

  • অ্যালকোহল, গাঁজা বা অন্যান্য নেশাদ্রব্যের ঘ্রাণ নেয়া।
  • অতিরিক্ত ঘাম।
  • বারবার বিশ্রাম নিতে ঘরে বা বাইরে যাওয়া।

উপসংহার

নেশা মানুষের চেতনাকে পরিবর্তন করে এবং বিচারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি সামগ্রিকভাবে ব্যক্তি এবং সমাজ উভয়ের উপরই উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। নেশার স্বল্প-মেয়াদী প্রভাবগুলোর মধ্যে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পারা এবং ঝুঁকি গ্রহণের আচরণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। চরম ক্ষেত্রে, নেশা দুর্ঘটনা, আঘাত এবং এমনকি প্রাণহানির কারণ হতে পারে। নেশা সামাজিক সমস্যা যেমন অপরাধ, সহিংসতা, এবং উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখে। নেশা প্রতিরোধ এবং মোকাবেলার জন্য একটি বহুমুখী পদ্ধতির প্রয়োজন যাতে শিক্ষা, নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োগ এবং চিকিৎসা পরিষেবাগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে। নেশার ট্যাবলেট এর নাম চিহ্নিত করে বিশেষজ্ঞের পেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রয় বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। অন্যান্য নেশাদ্রব্য বিক্রয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি বাড়ানো যেতে পারে। তাছাড়া পদার্থ ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকিগুলো বোঝানো সমাজের দায়ীত্বের মধ্যে পড়ে। সমাজকে অবশ্যই এমন পরিবেশ তৈরির দিকে কাজ করতে হবে যা দায়ী মদ্যপান এবং মাদকের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করে, পাশাপাশি যারা নেশা জাতীয় আসক্তির সাথে লড়াই করছে তাদের জন্য সহায়তা ও মোটিভেশনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। একটি ব্যাপক সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে নেশাকে মোকাবেলা করা এবং এর নেতিবাচক প্রভাবগুলো হ্রাস করতে পারি এবং স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারি।


সচরাচর-জিজ্ঞাস্য

১। প্রশ্নঃ নেশা, আসক্তি ও অভ্যাস কি এক?

উত্তরঃ অনেকেই নেশা, আসক্তি ও অভ্যাসকে এক মনে করেন। এটা সঠিক নয় এই তিনটি ভিন্ন অর্থ বহন করে। কোন কাজ বা দৈনন্দিন কাজ ধারাবহিকভাবে করতে করতে সেই কাজ অভ্যাসে পরিণত হয়। সুতরাং, অভ্যাস হলো একটি আচরণগত প্যাটার্ন যা আমরা নিয়মিত বিরতিতে প্রায়শই পুনরাবৃত্তি করি। আবার কোন কাজের অভ্যাস মনে ভালোলাগা সৃষ্টি করলে সেই কাজের ধারাবাহিক অভ্যাসের কারনে আসক্তিতে পরিণত হয়। সুতরাং আসক্তি হলো মনের ক্রিয়াশীল একটা অবস্থা। আর নেশা হলো নির্দিষ্ট বিরতিতে বা ধারাবাহিকভাবে বিশেষ কোন পদার্থ গ্রহন করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উত্তেজিত করার মাধ্যমে সুখ খোঁজার চেষ্টা করা। নেশা ধারাবাহিক অভ্যাসে ধীরে ধীরে আসক্তিতে পরিণত হয়।


২। প্রশ্নঃ সিগারেট কি মাদক?

উত্তরঃ সিগারেটে যে তামাক ব্যবহার করা হয় সেই তামাকে নিকোটিন নামক এক পদার্থ থাকে, যা একটি মাদক দ্রব্য। তাই বলা যায় সিগারেট একটি মাদকদ্রব্য।


৩। প্রশ্নঃ মানুষ নেশা করে কেন? 

উত্তরঃ যেকোন কারনে মনের ভিতরে সৃষ্ট কষ্ট থেকে সাময়িক নিস্তার পেতে, দুঃখের স্মৃতি সাময়ীকভাবে ভুলতে, অতি আনন্দের ঘটনাকে সেলিব্রেশন করতে, অজানাকে জানার উদ্দেশ্যে ও সঙ্গদোষে মানুষ নেশা করে।


৪। নেশা জাতীয় দ্রব্য কি কি?

উত্তরঃ মদ, গাঁজা, ভাং, চরস, গুল, জর্দা, ফেনসিডিল, আইস, হেরোইন, প্যাথেড্রিন, কোকেন, ইয়াবাসহ এগুলো সবই মাদকের অন্তর্ভুক্ত।


৫। প্রশ্নঃ সবচেয়ে বড় নেশা কী?

উত্তরঃ সবচেয়ে বড় নেশাসামগ্রী হিসেবে হেরোইনকেই মনে করা হয়। এটাই সবচেয়ে আসক্তিযুক্ত ড্রাগ। আফিম গাছ থেকে পাওয়া বীজ থেকে হেরোইন উৎপাদন করা হয়, যা সাদা বা বাদামী রংয়ের পাউডার হিসেবে বিক্রি হয়।


৬। প্রশ্নঃ মাদকাসক্তির কারণ কি?

উত্তরঃ মাদকাসক্তি এক ধরনের মানসিক রোগ। মাদকাশক্তির কারন সুনির্দিষ্টভাবে বলা কঠিন। বিভিন্ন কারনেই মানুষ মাদকাসক্ত হতে পারেন। যেকোন কারনে মনের ভিতরে সৃষ্ট কষ্ট থেকে সাময়িক নিস্তার পেতে, দুঃখের স্মৃতি সাময়ীকভাবে ভুলতে, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে, সঙ্গদোষে মানুষ মাদকাশক্তির দিকে ধাবিত হতে পারে।


Feriwala এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Post a Comment

0 Comments