Feriwala - Inspiring Heart and Lives

Header Ads Widget

ঠগীঃ ভারতের ভয়ঙ্কর হত্যাকারী সম্প্রদায়ের রহস্য

ঠগী

ঠগী (Thuggee) নামটি এসেছে সংস্কৃত স্থগ থেকে, যার অর্থ হলো "প্রতারক"। ঠগী হলো ভারতবর্ষের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর এক খুনি সম্প্রদায়। বিশ্বে খুনিদের কোনো সংগঠিত সম্প্রদায় ঠগীর মতো এত মানুষকে হত্যা করেনি। ১৮৩০-এর দশকে এক ইংরেজ ইতিহাসবিদের হিসাব অনুযায়ী এই ঠগী সম্প্রদায় প্রতিবছর অন্তত ৪০,০০০ জন মানুষকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল। ঠগীদের বিষয়ে জানাজানি হবার প্রায় ৩০০ বছর পূর্ব থেকেই তাদের এই হত্যাকান্ড প্রচলিত ছিলো। ঠগীদের দ্বারা হত্যাকান্ডের মোট হিসাব করতে গেলে চোখ কপালে উঠে যাবে। পৃথিবীতে আর কোন দল এত সময় ধরে এত সংখ্যক হত্যাকান্ড ঘটায়নি সে হিসাবে বলা যায় ঠগীরাই পৃথিবীতে সবচেয়ে ভয়ংকর হত্যাকারী সম্প্রদায়।

ঠগী
ঠগী



ঠগী কাহিনী

যদিও ঠগীদের উৎপত্তি সম্ভবত ষোড়শ শতাব্দীর কোনো এক সময়ে, তবে ১৮১২ সালের পূর্বে ঠগীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়নি। গ্রেট ব্রিটেন ভারতে তার অঞ্চলগুলি সম্প্রসারণ করতে শুরু করেছিল এবং ব্রিটিশ প্রশাসকরা ক্রমশই শঙ্কিত হয়ে উঠছিল স্ট্র্যাংলারদের দল নিয়ে যারা ঘোরাফেরা করতো এবং পথচারী যাত্রী, ব্যবসায়ী, তীর্থযাত্রীদের খুন করতো। প্রথমদিকে এই হত্যাকাণ্ডের মধ্যে কোনও সংযোগ নেই বলে মনে হয়েছিল, কিন্তু একবার গঙ্গা এলাকায় একাধিক কূপের মধ্যে ৫০ জনের মৃতদেহ পাওয়া যায়, যাদের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়, এতে এই খুনের পিছনে বড় একটা খুনি গ্রুপের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে। এত বড় মাপের গণহত্যায় ও নিহতদের মৃতদেহের নিষ্পত্তির কোন বিশেষ ব্যবস্থা না নেওয়ায় তৎকালীন কর্তৃপক্ষ এই কাজ বড় ধরনের এক খুনি সম্প্রদায়ের কাজ বলে মোটামুটি নিশ্চিত হয়। তাছাড়া মৃতদেহের পরীক্ষায় জানা যায় যে খুনিরা তাদের শিকারের অঙ্গগুলির সমস্ত জয়েন্টগুলি ভেঙে দেয় যাতে পচন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা যায় এবং কবরের ফুলে যাওয়া রোধ করা যায় যা শেয়াল বা অন্যান্য মাংসাশী বন্য প্রাণীদের আকর্ষণ করবে। এই ধরনের প্রমাণ কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করেছে যে তারা একটি গোপন সমাজ, খুন করা যাদের পেশাগত।


ঠগীরা অত্যন্ত নীরব এবং কার্যকরী হত্যাকাণ্ডে পারদর্শী ছিলো এবং তারা প্রায়শই ব্যবসায়ী, তীর্থযাত্রী এবং এমনকি সৈন্যদের ছদ্মবেশে ভ্রমণ করতো। প্রতিটি দলে অধিকতর সাবলীল ও দক্ষ ব্যক্তি দলনেতা হিসেবে দায়ীত্ব পালন করতো। ঠগিরা দলের সর্দার বা দলনেতাকে জমাদার নামে অভিহিত করত। ঠগীর প্রতিটি দলে একটি ছোট ইউনিট ছিল যারা হোটেল এবং বাজারের জায়গাগুলিতে ভ্রমণকারীদের এবং তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিষয়ে খোঁজখবর নিতো। এই অনুসন্ধানকারীরা তাদের পছন্দের টার্গেট সিলেক্ট করে তাদের শিকারের মতো একই গন্তব্যের দিকে রওনা হতো। তারা তাদের শিকারের সাথে আলাপচারিতার মাধ্যমে একটি বিশ্বাসী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতো। পথচলার ক্লান্তিতে তারা বিশ্রাম নিতো ও খোশগল্পে মেতে ‍উঠতো। খোশগল্পের কোন এক ফাঁকে খুনিরা হত্যাকান্ড সংঘটিত করতো।


কোন বণিক বা ভ্রমণকারীকে হত্যা করতে দলের সবাই শিবিরে অবস্থান করত। মূলদলটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হতো। একদল হত্যাকান্ড ঘটাবে, আরেক দল আশেপাশে পাহাড়ায় নিয়োজিত থাকবে এবং আরকটি দল হত্যাকান্ডের পর মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে ফেলবে। হত্যাকান্ড ঘটানোর জন্য পরিকল্পনামাফিক তিনজনের একটা গ্রুপ নির্বাচিত করা হতো। উপযুক্ত সময় ও সুযোগ বুঝে দলনেতা সংকেত দিতো “তামুক লাও”। সংকেত পেয়ে তিনজনের একজন ঠগী শিকারের ঘাড়ে রুমাল পেচিয়ে ধরতো, অন্যজন তার মাথাটি ঠেসে ধরতো এবং তৃতীয়জন তার পা শক্ত করে মাটিতে চেপে ধরে রাখতো। হঠাৎ কোন ভিকটিম পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও আশেপাশের পাহারারত অন্যান্য ঠগীরা ভিকটিমকে ধরে হত্যা করতো। হত্যা করার পর দলনেতা সংকেত দিতো “এক বিচালি দেখ” তার মানে মৃতদেহ পুঁতে ফেল। সংকেত পেয়ে পূর্বপরিকল্পনামাফিক মৃতদেহের শিরদাঁড়া ও অন্যান্য হাড়ের জয়েন্টগুলো ভেঙ্গে মাটিতে পুঁতে ফেলতো। যাতে মৃতদেহ ফুলে না উঠতে পারে, আর শিয়াল বা অন্যান্য মাংসাশী প্রাণীদের নাগালের বাইরে থাকে। তারপর কবরের উপর বসে ভোজন পর্ব শেষ করে পরবর্তি পরিকল্পনা করতো। এমনি করেই এই খুনিরা লাখ লাখ খুন করেও বিষয়টিকে দীর্ঘদিন গোপন রাখতে পেরেছিলো এবং তারাও নিরাপদে ছিলো কয়েক শতাব্দী।


ঠগীদের একটি অদ্ভুত নীতি-নৈতিকতা ছিল, তারা সবাইকে নির্বিচারে হত্যা করতো না। তারা ভিক্ষুক, সঙ্গীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী, ছুতোর, কামার, ঝাড়ুদার, তেল বিক্রেতা, পঙ্গু বা কুষ্ঠরোগী, গঙ্গার জল-বাহক ও নারীদের সাধারনত হত্যা করতো না। তবে নারী হত্যার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও, স্বামীর সাথে ভ্রমণরত স্ত্রীদের উপস্থিতি গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য স্বামীর সাথে সাথে ভ্রমণকারী নারীকেও শ্বাসরোধের প্রয়োজন পড়তো। 


ঠগী কারা?

ঠগীদের কোন নির্দিষ্ট ধর্ম ছিলোনা। প্রচলিত যেকোন ধর্ম থেকেই ঠগী সম্প্রদায়ে আসতে পারতো। এ সম্প্রদায়ে হিন্দু, মুসলিম সহ অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও ছিলো। ঠগী সংস্কৃতি আদি সম্প্রদায় বা গোত্র দ্বারা বিভক্ত ছিলো। গোত্রগুলো হলো ভীন, ভুজসোত, বাহলিম, হুত্তার, কাচুনি, গানু ও তুনদিল। ভারতবর্ষে যতো ঠগী ছিলো এই সাতটি গোত্র ছিলো আদি। একজন মানুষকে ঠগী সম্প্রদায়ে আসতে হলে অবশ্যেই দীক্ষা নিতে হতো। আবার এদের ঘরে জন্ম নেয়া শিশুরাও বংশপরম্পরায় এই কাজে লিপ্ত হতো। শিশুদের ক্ষেত্রে দীক্ষা নেওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়স ছিল ১০। নতুন দীক্ষা নেয়া ঠগীদেরকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া। দীক্ষা না নিলে তাদের দলে রাখা হলেও কোন কাজ করতে দেয়া হতোনা। একজন ঠগী বালক ১৮ বছর হলে সে হত্যার অনুমতি পেত। অনুশীলনকারীদের হত্যা করার জন্য তাদের শিকারের গলায় শক্ত কাপড়ের ফাঁসের দ্রুত, শান্ত পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এই অস্ত্র, "রুমাল" ঠগীর প্রতিটি সদস্য কোমরে গিঁট দিয়ে পড়ে থাকতো।


ঠগীরা যে ধর্মেরই হোক এই সম্প্রদায়ে তাদের একটি সাধারণ বিশ্বাস ছিলো। আর সেটা ছিলো দেবী ভবানী বা কালী। ভবানী বা কালী ছিলো ঠগীদের উপাস্য দেবী। জয় ভবানী শ্লোগান উচ্চারণ করেই তারা খুনের কাজে নেমে পড়তো। তাদের বিশ্বাস মোতাবেক, তাদের এই মানুষ হত্যার বিষয়টিও দেবীর সন্তুষ্টির উপলক্ষ্যে, তারা কখনোই মানতে চায়নি এটা তাদের পেশা। তাদের দাবী তারা দেবীকে খুশি করতেই এই কাজে নিযুক্ত ছিলো, হত্যার পরবর্তি সম্পদের লুটপাটকে মনে করতো দেবীর আশীর্বাদ। হত্যাকান্ডকে তারা অত্যন্ত গর্বের দৃষ্টিতে দেখতো। ঠগিদের প্রধান তীর্থক্ষেত্র ছিল পশ্চিমবাংলার কালীঘাট ও বিন্ধ্যাচলের ভবানী মন্দির। তারা ছিলো অতি কুসংষ্কারাচ্ছন্ন। তারা মিশনে রওনাকালে ঘুঘু বা পেঁচার ডাকের জন্য অপেক্ষা করতো, কোদাল মন্ত্রপুত করতো। ঠগীদের সবচেয়ে শক্তিশালী নিয়ম ছিল রক্তপাত নিষিদ্ধ। ঠগীদের বিশ্বাস অনুসারে, দেবী কালী ঠগীদের পিতাদেরকে ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করতে এবং রক্ত প্রবাহের অনুমতি না দিয়ে হত্যা করতে শিখিয়েছিলেন। ঠগীরা মনে করে তাদের সমস্ত শিকার দেবী কালীকে বলি দেওয়া হয়েছে। ঠগীরা এই অভিযোগে ব্যাপকভাবে ক্রোধান্বিত হতো যে তারা কেবল লুটের জন্য হত্যা করেছিল।



বাংলার ঠগী

আনুমানিক ১২৯০ সালে সুলতানি আমলে ঠগীর পরিচয় পাওয়া যায়। ফিরোজ শাহের ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায় সে সময় প্রায় এক হাজার ঠগী ধরা পড়েছিলো এবং তাদের বিচারের জন্য দিল্লীতে সুলতানের হাজির করা হয়েছিলো। সুলতান বিচারে ঠগীদের সাজা না দিয়ে আর কোনদিন ফিরে না আসার শর্তে তাদের বড় একটি নৌকায় তুলে ভাটির দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তিতে ঠগীরা আর দিল্লীতে ফেরৎ না গেলেও তারা বাংলায় এসে বসবাস শুরু করে। সে সময় বাংলার পাশাপাশি বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশেও ঠগীর বিস্তার লাভ করে। বাংলায় ব্যাপক হারে ঠগীর বিস্তার লাভ করে বিশেষ করে কলকাতা, বর্ধমান থেকে জব্বলপুর, বেনারস, কানপুর। সে সময় পূর্ববঙ্গে বর্তমান ঢাকা, বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও বৃহত্তর ফরিদপুরে জলঠগী বা পাঙ্গু বা ভাগিনা নামে এক ধরনের ঠগীর আধিক্য ছিলো। এই ঠগীদের শিকারের প্রধান ক্ষেত্র ছিলো জলপথ। নৌকায় ভ্রমণ করা পথিকরা ছিলো তাদের মূল টার্গেট। এরাও সাধারন পথিকের বেশে পথিকের সাথে নৌকায় ভ্রমণ করতো। নৌকার মাঝিরাও ছিলো তাদেরই লোক। এরাও তিনবার পাটাতনে বৈঠা ঠুকে হত্যার সংকেত দিতো এবং হত্যার পরবর্তিতে মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দিতো। 


ঠগী দমন

১৮২২ সালে, উইলিয়াম স্লিম্যান, বেঙ্গল আর্মির একজন অফিসার যিনি সিভিল সার্ভিসে বদলি হয়েছিলেন, গভর্নর জেনারেল লর্ড বেন্টিঙ্ক ভারতকে শ্বাসরোধকারীদের সমাজ থেকে মুক্ত করার জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। চারটি ভারতীয় উপভাষায় সাবলীল, স্লিম্যান ছিলেন একজন ব্রিটিশ কর্মকর্তা যিনি প্রথম ক্রমবর্ধমান সন্দেহ নিশ্চিত করেছিলেন যে ঠগীদের দ্বারা মধ্য ভারত জুড়ে অসংখ্য হত্যা করা হয়েছিল। তিনি ভাল করেই অবগত ছিলেন যে এই ধরনের বৃহৎ আকারের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা সহজ কাজ হবে না, কারণ ঠগী সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের শিকার হওয়া ভ্রমণকারী এবং ব্যবসায়ীদের থেকে আলাদা ছিল না। আবার তারা সারাবছর এই কাজ করতো না,  তারা সাধারণত ঘর সংসার করতো বিশেষ সময় এলেই মানে শরৎকাল শুরু হলেই তারা সংঘবদ্ধভাবে যাত্রা করতো মানুষ হত্যার উদ্দেশ্যে। এইসব কারনে ঠগীদের রহস্য উদঘাটন করা ও তাদের  শনাক্ত করার কাজটিকে আরও কঠিন করে তুলেছিল।


একটি মানচিত্রে প্রতিটি আবিষ্কৃত আক্রমণের স্থানের দৃশ্যকে সতর্কতার সাথে চিহ্নিত করে এবং তারিখের সতর্কতামূলক রেকর্ড বজায় রাখার মাধ্যমে, স্লিম্যান পরবর্তি গণহত্যা সংঘটিত হতে পারে এমন এলাকাগুলির পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হন। যখন তার এজেন্ট এবং তথ্যদাতারা তার কাছে খবর নিয়ে আসে যে ঠগীদের পরিচিত সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে দেখা গেছে, তখন স্লেমান তার ব্যক্তিগতভাবে নিয়োগকৃত পুলিশ অফিসারদেরকে ব্যবসায়ীদের ছদ্মবেশে বাইরে পাঠান যাতে ঠগীরা তাদের উপর আক্রমণ করে আর ঠগীরা ধরা পড়ে।

১৮৩০ থেকে ১৮৪১ সালের মধ্যে, স্লিম্যানের পুলিশ অন্তত ৩,৭০০ জন ঠগীকে আটক করে, চিরতরে কুখ্যাত গোপন সমাজের পিঠ ভেঙে দেয়। এইমধ্যে শুধুমাত্র ৫০ জন মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করার জন্য ক্ষমা পেয়েছিলেন যা ঠগী সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০০ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। অনেক ঠগী জল্লাদকে অনুরোধ করেছিলো তারা নিজেরাই ফাঁসী নেয়ার জন্য। 


ঠগীর সম্পর্কে অনেক ভয়ঙ্কর তথ্য জানা যায়। ২০ জনের একটি ঠগী দল স্বীকার করেছে যে তারা ৫,২০০ খুনে অংশ নিয়েছিল। অনেক বছরে চেষ্টা করে ঠগীদের সর্দার বা জমাদার বাহরাম নামক একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন, যিনি ৪০ বছর ধরে মানুষ হত্যায় লিপ্ত ছিলেন এবং তিনি মোট ৯৩১ জনকে হত্যা করেছিলেন। ঠগির জবানবন্দি হিসাবে যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি অনুশোচনা বা অপরাধবোধের কোনো অনুভূতি অনুভব করেছেন কিনা, তখন তিনি তীব্রভাবে উত্তর দিয়েছিলেন যে তার সম্প্রদায়ের নীতি-আদর্শ ও বিশ্বাসের সাথে অনুসরণ করে মনে কোন অনুশোচনা বোধ নেই। 

ভয়ংকর রূপে ঠগী
ভয়ংকর রূপে ঠগী



উপসংহার

অবশেষে ১৯৩৯ সালে কয়েক শতাব্দী ধরে চলা ভয়ঙ্কর একটা হত্যাকারী সম্প্রদায় পুরোপুরি নির্মূল হয়ে যায়। উইলিয়াম স্লীম্যান ঠগীদের চিরতরে ধংস সম্পন্ন করার আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দেন। উইলিয়াম স্লিম্যান এর কল্যানে ভারত মুক্তি পেয়েছিলো গোপন হাজারো হত্যাকান্ড থেকে। ভাবা যায় হাজার হাজার পরিবারের সদস্য কোন কাজে বেরিয়েছে কিন্তু ঠগীরা হত্যা করে মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে রেখেছে। ঐ পরিবারের সদস্যরা কোনদিন জানতেও পারেনি যে সে কি বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে? লক্ষ লক্ষ মানুষ ঠগীদের কারনে চিরতরে হারিয়ে গেছে কিন্তু আত্মীয়-স্বজনরা কোনদিনই জানতে পারেনি। ধন্যবাদ উইলিয়াম স্লিম্যান! উনি না থাকলে হয়তো আমরাও দেখতে পেতাম খুনি সম্প্রদায়কে সম্পূর্ণ নতুনরূপে। তবে আজও ভয়ংকর ঠগীদের ইতিহাস শুনলে শরীর ও মন শিউরে উঠে।


Feriwala এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Post a Comment

0 Comments